চট্টগ্রামসাতকানিয়া

নদভীর ভাতিজা চেয়ারম্যান সেলিমের পাওনাদারেরা একাট্টা

চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা নেজামুদ্দীন নদভীর ভাতিজা ইউপি চেয়ারম্যান আ ন ম সেলিম উদ্দিন চৌধুরীর পাওনাদারেরা একাট্টা হয়েছেন।

রবিবার (১৭ মার্চ) পাওনা টাকা আদায়ে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।

দুপুরে উপজেলার মাদার্শা ও এঁওচিয়া ইউনিয়ন এবং সাতকানিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এতে লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ফিরোজ কামাল বলেন, আমি ফরওয়ার্ড ইটের ব্যবসা করি। সে সুবাধে চেয়ারম্যান সেলিমের কাছ থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে ব্যবসা বাবদ ১৬ লাখ টাকা পাওনা ছিলাম। অনেক কষ্টে ৮ লাখ টাকা আদায় করেছি। টাকা খুঁজতে গিয়ে ইয়াবা, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ, ছুরিকাঘাতের মামলা খেয়েছি। শুধু তাই নয়, সারা জীবন যে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এলাকায় টিকে রয়েছি, সেই জামায়াত-শিবিরের ভাংচুর মামলাসহ ৮টি মামলার আসামি হয়েছি। বর্তমানে ৬টি মামলায় খালাস পেয়েছি। আরও ২টি মামলা চলমান রয়েছে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিভিন্ন সময় এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলেও এমপির অজুহাতে ১টি মামলাও থানা পুলিশ নেয়নি। সারা বছর অসহায়ের মত অনেক জায়গায় ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি।

বালু ব্যবসায়ী মো. এরফান বলেন, মেম্বার নুরু, পলাশ, রফিক, তরিক ও চেয়ারম্যান সেলিম মিলে আমার একটি স্কেভেটর পুড়িয়ে দেয়। আমার মালিকানাধীন একটি ট্রাকে অবৈধ গাছ তুলে দিয়ে পুলিশের ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা আদায় করেছে।

হারুনুর রশিদ বলেন, নলকুপ বসানোর কাজ করতে গিয়ে সাবেক এমপি নদভী ও তাঁর ভাইপো চেয়ারম্যান সেলিমের কাছ থেকে ১৮ লাখের অধিক টাকা পাওনা রয়েছি। টাকা খুঁজলে মামলা দেওয়ার ভয় দেখানো হত।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহায়তা কামনা করেন।

মানববন্ধনে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ লেখা প্লে কার্ড হাতে অংশ নেন কয়েক শতাধিক ভুক্তভোগী নারী ও পুরুষ ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চেয়ারম্যান সেলিম দেওদীঘি বাজারকে মাদকের ট্রানজিট পয়েন্টে রূপান্তর, সরকারি গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণে অনিয়ম, দেওদীঘি বাজারে নিজের জবাইকৃত গরু ছাড়া অন্যের মাংস বিক্রি করতে বাঁধা, আবু রেজা নদভীর নির্দেশনায় ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির ইটভাটা দখল, হাসপাতাল নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা দখল, সরকারি বনের অবৈধভাবে গাছ কাটা, মাদার্শা স্লুইচ গেইট সংলগ্ন সেচ প্রকল্প দখল এবং নদভী পরিবারের সকল অপকর্মের বিচারসহ ফৌজদারি অপরাধে দ্রুত চেয়ারম্যান সেলিমের অপসারণের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে ভুক্তভোগী অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাতকানিয়া উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি মো. রিদুয়ানুল হক, যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান মুরাদ, কামাল উদ্দীন, মো. নাছির উদ্দীন, মাদার্শা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সামশুল আলম ও মফিজ উদ্দীন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *