কক্সবাজারচট্টগ্রাম

নির্ধারিত সময়ের আগেই উন্মুক্ত হলো কোহোলিয়া সেতু

‘আমাদের অনেক দিনের দাবি পূরণ হয়েছে। কোহোলিয়া সেতু নির্মিত হওয়ায় এখন মাতারবাড়ী-মহেশখালী সড়কে গাড়ি চলবে নির্বিঘ্নে। আমরা এখন খেতে উৎপাদিত লবণ সরাসরি ট্রাকে করে শহরে পাঠাতে পারব। এতে পণ্যের দামও পাব।’

মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম ছমি উদ্দিনের কথায় ঝরে এই উচ্ছ্বাস। তিনি বলেন, সেতুটি নির্মিত হওয়ায় মাতারবাড়ী প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াতের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। সাথে স্থানীয় বাসিন্দারা অল্প সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছতে পারবে।

উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের আফজলিয়া পাড়া সড়কের কোহোলিয়া নদীর ওপর নির্মিত কেহোলিয়া সেতু তার মতো আরও অনেক মানুষের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকাল ৪টায় সেতুটি আনুষ্ঠানি উদ্বোধনের আগে চালিয়াতলী মাতারবাড়ী ভাঙাচোরা সংযোগ সড়ক দিয়ে যাতায়াতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে জনদুর্ভোগ লাগব করতে সেতুটি যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীকি মারমা, মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী, উপজেলা প্রকৌশলী, প্রকল্প কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পাকা সেতু পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। সেতুটি নির্মাণের ফলে মাতারবাড়ী, ধলঘাটা ইউনিয়ন ও মহেশখালী উপজেলার বাসিন্দারা যাতায়াতে সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি এসব এলাকার উৎপাদিত পণ্য এখন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের কাজটি সহজ হবে।

জানা গেছে, উপজেলার কোহোলিয়া নদীর ওপর কোহোলিয়া সেতুর কাজ সমাপ্তির মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সাফল্যের চূড়ান্ত রূপের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে মহেশখালীর উত্তরঞ্চলবাসী। সেতুটির মাঝখানে কোহোলিয়া নদী পূর্বপাশে কালারমারছড়া পশ্চিম পাশে মাতারবাড়ীর অংশের অবস্থান। অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত কোহোলিয়া সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। সেতুটি ৮৯৫ মিটার লম্বা ও ১০ পয়েন্ট ২৫ মিটার প্রস্থ।

সেতুর নির্মাণ কাজের প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে যে ১০ শতাংশ অসম্পূর্ণ আছে তা এখন চলছে ঘষামাজা, সৌন্দর্যবর্ধনসহ আনুষঙ্গিক কাজ। সেতুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন কোম্পানি নির্মাণ করছেন।

কোহোলিয়া নদীর উপর নির্মিত ৮৯৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটি বিশেষ করে মাতারবাড়ী ও ধলঘাটার মানুষের স্বপ্নের বাস্তবায়ন এবং এটি খুলে দিবে যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত। অপরদিকে সেতুর পশ্চিম পাশে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প ও গভীর সমুদ্র বন্দরের কূলঘেঁষে যে নান্দনিক বন্দর সড়কটি করা হয়েছে এটি পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এছাড়া স্থানীয়রা বিকালে উক্ত সড়কে ঘুরতে এসে নিজেদের ছবি তুলে রাখতে দেখা গেছে। অপরদিকে নির্মাণকাজ ৯০ ভাগ শেষ হওয়ায় উদ্বোধনের আগে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

মাতারবাড়ী সিকদার পাড়ার কৃষক সাইফুল বলেন, সেতুটি নির্মিত হওয়ায় পণ্য পরিবহনে আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। মাতারবাড়ী ও মহেশখালীর লোকজনকে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

মাতারবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আবু হায়দার বলেন, কোহোলিয়া নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মিত হওয়ায় আমরা খুশি। এ জন্য সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ও সরকারের প্রতি উপকূলের মানুষ কৃতজ্ঞ।

আশেক উল্লাহ রফিক এমপি বলেন, মাতারবাড়ী-ধলঘাটা ও মহেশখালী অন্তত চার লাখ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে কোহোলিয়া নদীর ওপর সেতু। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ সহজে প্রকল্পে, জেলা ও বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *