জাতীয়

নোবেল পেতে লবিস্ট রাখার মতো অত টাকা-পয়সা আমার নেই : প্রধানমন্ত্রী

নোবেল প্রাইজের জন্য না কি আমি ড. ইউনূসকে হয়রানি করছি। আমার সঙ্গে আসলে কারো কোনো দ্বন্দ্ব নেই। জীবনেও আমার নোবেল প্রাইজের জন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। নোবেল প্রাইজ পেতে লবিস্ট রাখার মতো অত টাকা-পয়সাও নেই। আর আমি কখনো চাইনি।কথাগুলো বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে গণভবনে সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি করার পর অনেক বিদেশি, অনেক নোবেল বিজয়ী আমাকে নিয়ে লিখেছে। কই আমি তো তদবির করতে যাইনি। ওগুলো আমার মাথার মধ্যেও নেই। যিনি অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেন, ব্যাংকের একটা এমডি… সে যখন একটা নোবেল প্রাইজ পায়, সেজন্য আমি কনটেস্ট করতে যাবো কেন?

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি আমি করেছি। পৃথিবীতে যত শান্তিচুক্তি হয়েছে, কয়টা অস্ত্রধারী আত্মসমর্পন করেছে? এক হাজার ৮০০ জন অস্ত্রধারী আমার কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছে। আমি তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তির কারণে আজকে সেখানে উন্নয়ন হয়েছে। চুক্তির আগে সেখানে কী অবস্থা ছিল? সেখানে কী আমরা কেউ যেতে পারতাম? ৬৪ হাজার শরণার্থী ছিল ভারতে। আমি তাদের ফিরিয়ে এনে প্রতিষ্ঠিত করেছি।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি এখন আমার নামে নোবেলের জন্য প্রস্তাব দেয়… আমরা তো যাইনি তাদের কাছে। আমার আসলে এসব পুরস্কারের দরকার নেই। এখানে আলাদা একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে, এখানে আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। আর বলে দিলো এটা নিয়ে আমার না কি জেলাসি!

সরকারপ্রধান বলেন, তিনি (ড. ইউনূস) তো রাজনৈতিক দল করতে চাইছিল, সেটিও লেখালেখি হয়েছে। ২০০৭ সালে দল করতে গিয়ে তিনি ব্যর্থ হলেন কেন? গ্রামের মানুষের জন্য যিনি এত কিছু দিয়ে থাকে, তিনি দল করতে পারলেন না কেন? তার দলে তো সেই মানুষগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। তারা সাড়া দেয়নি। কারণ তারা সুদের চাপে মৃতপ্রায় ছিল। সে দায় কী আমার? আর আমি তো তখন জেলে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমি বিদেশে… আমার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দেওয়া হয়েছিল। আমি তো দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাকে বলা হলো, ফিরতে দেওয়া হবে না। আমি তো ফিরেছি। আমার সঙ্গে তার কীসের তুলনা? যায় না।

তিনি বলেন, আমি তো কখনো কিছু বলিনি। একটা প্রশ্ন আমার, এই যে বিদেশে বিদেশে বিনিয়োগ, এটা কীভাবে হলো? টাকাটা কোত্থেকে আসলো, কাদের টাকা? সেই জবাবটা দিক। এটা সংবিধিবদ্ধ চাকরিতে থাকা অবস্থায় বিদেশে বিনিয়োগ, আইন কী বলে? আমরাই তো সবাই মিলে তাকে তুলেছি, এটা ঠিক। এখন না কি সব দোষ আমার। কারণ সব থেকে বেশি টাকা আমি দিলাম তার গ্রামীণ ব্যাংকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার গ্রামীণ ব্যাংক দাঁড় করাতে টাকা দেওয়া, ১৯৯৭-৯৮ সালে বন্যা… গ্রামীণ ব্যাংক যায় যায় অবস্থা। ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছি। সব থেকে বেশি যে করে, তার মূল্যায়ন এমন! আবার জেলাসি… জেলাসি করার কী আছে? সে আসুক না, মাঠে আসুক! চলুক আমার সঙ্গে। আসুক, কথা বলব। সব থেকে বেশি আর্থিক সুবিধা নিয়েছে আমার কাছ থেকেই।

শেখ হাসিনা বলেন, উনার পয়সা আছে, উনি লেখাচ্ছেন। উনি যদি এতই জনপ্রিয় হন, তাহলে বিজ্ঞাপন কেন? তার জন্য তো সারা বিশ্ব ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। একটা মামলা চলছে। সেটি নিয়ে তো আমি কথা বলতে যাই না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *