পরিবারিক বিরোধের জেরে বন্ধ গ্রামীণ সড়ক
পরিবারিক বিরোধের জেরে রাস্তা কেটে তৈরি করা হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এর ফলে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গেছে দীর্ঘদিন থেকে ব্যবহৃত পথ।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের উত্তর রাজনগর গ্রামে একটি পক্ষ এই সমস্যা উৎপত্তি ঘটায়।
এতে ওই গ্রামের ৮-১০টি পরিবারের লোকজন চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় দুইটি পক্ষের বিরোধ তুঙ্গে রয়েছে। যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের উত্তর রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত ফরজান আলীর স্ত্রী মনিরুন বেগমের সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলছে একই গ্রামের প্রতিবেশী মুকিছ মিয়া গংয়ের। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক করেও সুরাহা হয়নি। সম্প্রতি মুকিছ মিয়া গং পরিকল্পিতভাবে নিরীহ মনিরুন বেগমসহ এলাকার ৮-১০টি পরিবারের লোকদের দীর্ঘদিন থেকে যাতায়াতের রাস্তাটির বিভিন্ন অংশ কেটে দেন। এতে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছেন না মনিরুন বেগমসহ অর্ধশতাধিক লোকজন।
এ ঘটনার পর মনিরুন বেগম বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় মৃত মফিজ আলীর ছেলে মুকিছ মিয়া, লোকমান মিয়া গংয়সহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন থেকে ব্যবহৃত রাস্তাটি অন্যায়ভাবে কেটে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ ভূমি জরিপের সরকারি নথি ও ম্যাপে রাস্তাটি উল্লেখ আছে। দীর্ঘদিন থেকে ওই রাস্তা দিয়ে এলাকার লোকজন চলাচল করেন।
ভুক্তভোগী মনিরুন বেগম বলেন, স্বামী হারা হয়ে সন্তানদের নিয়ে কোনোমতে জীবনযাপন করছি। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় প্রতিপক্ষ মুকিছ মিয়া গং ৩০-৩৫ বছর ধরে চলাচল করা ওই রাস্তাটি কেটে ফেলেন। এতে স্কুলকলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ব্যাঘাত ঘটছে। আমরা প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের মারধর করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। আমরা ন্যায়বিচার চাই।
অভিযুক্ত লোকমান মিয়া রাস্তা কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এদিকে রাস্তার কোনো প্রয়োজন নেই। মনিরুন বেগমের তৈরি ঘরের কারণে রাস্তা প্রশস্ত না হওয়ায় গাড়ি চলাচল করতে পারে না। এ কারণে পুরাতন রাস্তাটি কেটে বিকল্প স্থান দিয়ে নতুন রাস্তা করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পৃথিমপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মন্নাফ বলেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সালিশ বৈঠক করে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়েছে। সালিশে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল, উভয়পক্ষ চলাচলে নিজ নিজ রাস্তা ব্যবহার করবেন। কেউ কাউকে বাঁধা দিবেন না।
কুলাউড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নুরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে রাস্তা কাটার সত্যতা পেয়েছি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন বলে সময় নিয়েছেন।
এই বিষয়টিকে ‘অন্যায় করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করে পৃথিমপাশা ইউপি চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান চৌধুরী বলেন, জনস্বার্থে শিগগির উভয়পক্ষকে নিয়ে আবারও সালিশে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।