চট্টগ্রাম

প্রকল্প শেষ হলেও পৌনে ২ কোটি টাকা বেতন-ভাতা দিলো চট্টগ্রাম ওয়াসা!

প্রকল্প শেষ হওয়া সত্ত্বেও প্রকল্পে নিয়োজিত দেখিয়ে ফান্ড থেকে বেতন ভাতাদি পরিশোধের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিরুদ্ধে। এনিয়ে পৌনে দুই কোটি টাকার অডিট আপত্তি দিয়েছে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অডিট অধিদফতর। যা প্রকল্পের ডিপিপি/আরডিপিপির আদেশের লঙ্ঘন বলছে প্রতিষ্ঠানটি।

স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অডিট অধিদফতরের এঅ্যান্ডএও ও উপদলনেতা মো. তৌফিকুল ইসলাম ওয়াসার এমডির কাছে পাঠানো প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিস্তারিত নিরীক্ষায় ব্যক্তিগত নথি, বেতন ভাতা এবং নিয়োগ সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেইজ-২) এবং চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও মোট ২৬জন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের রাজস্ব বাজেট কোড হতে বেতন ভাতাদি বাবদ ১ কোটি ৮৬ লাখ ৩ হাজার ৮২০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যেখানে প্রকল্প শেষ, চাকরিও শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চাকরিতে বহাল রেখে রাজস্ব খাত হতে অনিয়মিতভাবে বেতন ভাতাদি পরিশোধ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা সুত্রে জানা যায়, চিটাগং ওয়াটার সাপ্লাই ইম্প্রুভমেন্ট অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রজেক্টটির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৮ সালের জুন মাসে এবং কর্ণফুলি পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেইজ-২) এর মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের জুন মাসে। প্রকল্প দুটি শেষে হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির একক ক্ষমতায় কর্ণফুলি পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেইজ-২) নিয়োজিত নিজের ভাগনি রওনক জাহান ও ভাগনি জামাই আবু নোমান সিদ্দিকীসহ ২৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পুনর্বহাল করেন। যার অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার নিজস্ব ফান্ড থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড থেকেও কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। শুধু তাই-ই নয়, ২০২৩ সালের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত বা প্রকল্পে কর্মরত কোনো কর্মকর্তা কর্মচারীকে চলতি দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ থাকলেও ওয়াসার এমডি নিজ ইচ্ছায় তাদের চট্টগ্রাম ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন।

অডিটের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রকল্প দুটির অধীন চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২০২১-২২ অর্থ বছরে বেতন বাবদ ৭৫ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বেতন বাবদ ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা খরচ করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এ ছাড়া বোনাস বাবদ ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১১ লাখ ৩৯ হাজার ১৬০ টাকা ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১০ লাখ ১৯ হাজার ৫৬০ টাকা চট্টগ্রাম ওয়াসার ফান্ড থেকে পরিশোধ করা হয়।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের অডিট আপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াসার এমডি একেএম ফজলুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে এমন অনেক অভিযোগ করে। আমরা চিঠির জবাব দেওয়ার পর আবার চুপ হয়ে যায়। এটা নিয়মতান্ত্রিক বিষয়। এটা তেমন কোনো বিষয় না।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চট্টগ্রাম ওয়াসায় চেয়ারম্যান ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *