জাতীয়

ভারতীয় ৫ বিদ্যুৎ কোম্পানির বাংলাদেশের কাছে পাওনা ১ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ভারতীয় পাঁচটি কোম্পানির বকেয়া এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি পাওয়ারই কেবল পাবে ৮০০ মিলিয়ন ডলার। ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন করিডোরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আদানি পাওয়ার।

মঙ্গলবার ভারতের বিদ্যুৎখাতের সাথে সংশ্লিষ্ট নির্বাহীদের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। নির্বাহীরা বলেছেন, কোম্পানিগুলো বকেয়া থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে; যা দুই দেশের দৃঢ় বন্ধুত্বের সম্পর্ককে তুলে ধরছে। তবে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো তাদের অংশীদারদের কাছে দায়বদ্ধ থাকায় এই পরিস্থিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।

ভারতীয় শিল্পখাতের একজন নির্বাহী বলেছেন, অংশীদারদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। যে কারণে এভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না। দেশটির ইংরেজি দৈনিক ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের কাছে এসইআইএল এনার্জি ইন্ডিয়ার পাওনা রয়েছে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি আছে।

এছাড়া তিনটি প্ল্যান্ট থেকে প্রায় ৭৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে। আরেক কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন ইন্ডিয়া (পিটিসি) গত মার্চের শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বাংলাদেশের কাছে পাওনা আছে ৮৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। পিটিসি ইন্ডিয়া ২০১৩ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে।

এর পাশাপাশি পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বাংলাদেশের কাছে ২০ মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে। এনটিপিসি, এসইআইএল এনার্জি এবং পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন এই বিষয়ে ইকোনমিক টাইমসের করা প্রশ্নের জবাব দেয়নি। তবে দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘কয়েকটি কোম্পানির পেমেন্ট সংক্রান্ত সমস্যা ছিল; যার মধ্যে কিছু সমস্যা কয়লা কেনার সাথেও সংশ্লিষ্ট।’’

আদানি পাওয়ারের এক কর্মকর্তা বকেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও বাংলাদেশের কাছে তাদের নির্দিষ্ট কত পরিমাণ অর্থ পাওনা রয়েছে, সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্য একজন নির্বাহী কর্মকর্তা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অর্থ পরিশোধ করা না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাওয়া তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে। কারণ ঋণদাতা, কয়লা সরবরাহকারী, খুচরা যন্ত্রাংশের যোগানদাতা ও বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের রক্ষণাবেক্ষণ-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবায় আগাম অর্থ প্রদান করতে হয় বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *