কক্সবাজারচট্টগ্রাম

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে সন্দেহ

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। প্রকল্পটি গ্রহণের প্রায় সাড়ে চার বছর পর ৬ হাজার ৫৭৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ ব্যয় বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের মূল কাজ শুরু না হওয়ায় ‘মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশন থেকে।

পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে এ সংশোধনী প্রক্রিয়া শেষ হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে এই প্রস্তাব ঢালাওভাবে অনুমোদন না দিয়ে প্রকৃতপক্ষে এত টাকার প্রয়োজন আছে কি না এবং কেন ব্যয় বাড়ছে, সেসব বিষয় নতুন করে পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগেও প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছিল। এবার দ্বিতীয় দফায় বিপুল পরিমাণ ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব আসায়, এখানে কোনো অনিয়ম আছে কি না, তা কঠোরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও এর আগে পরিকল্পনা কমিশন একনেকে অনুমোদনের সুপারিশ করেছিল, তবুও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনা করতে বলেছে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, বর্তমান আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্যে এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজন আছে কি না, সেটিও পর্যালোচনা করা উচিত।

প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এরই মধ্যে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়। এবার দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ৬ হাজার ৫৭৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি ৪০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রকল্পের মূল মেয়াদ ৩ বছর বাড়িয়ে ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ডলারের দাম বৃদ্ধি, সিডি ভ্যাট, পোর্ট চার্জ, ভূমি অধিগ্রহণ, কন্টিনজেন ফি, পরামর্শক ফিসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক ও জনপথ অংশে নকশা পরিবর্তন এবং রেট শিডিউল পরিবর্তনের কারণেও ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ৭১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তবে প্রকল্পের মূল পূর্ত কাজ শুরু না হওয়ায় বাস্তব অগ্রগতি এখনো শূন্য শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *