চট্টগ্রাম

লাভ পাওয়ায় চাল বিক্রিতে আগ্রহ বেড়েছে মিলারদের

গত দুই বছর চট্টগ্রামে বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। এবার সরকারের কাছে চাল বিক্রিতে আগ্রহ বেড়েছে মিলারদের। ইতিমধ্যেই আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ শতাংশ। ধান সংগ্রহ হয়েছে ৩৪ শতাংশ।

মিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুই মৌসুমে (আমন ও বোরো) ধান-চালের বাজারমূল্য বৃদ্ধি থাকায় সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। গত আমন মৌসুমে চট্টগ্রামে সরকারি সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য অধিদপ্তর। বোরো সংগ্রহও আশানুরূপ হয়নি।

চলতি বছরের জুন মাসে ধান-চাল সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু হয়। এ কার্যক্রম চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।

খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে বোরো ধানের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৬ হাজার ৫৮ মে. টন। তার বিপরীতে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে প্রায় দুই হাজার ৮৪ মে. টন। কৃষকদের কাছ
থেকে কেজিপ্রতি ৩২ টাকা দরে ধান কিনছে সরকার।

দীর্ঘদিনের অভিযোগ, সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রিতে কৃষকদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। গুদাম কর্মকর্তাদের উৎকোচ না দিলে নানা অজুহাতে ধান ফেরত দেয়। এতে লাভের চেয়ে ধান গুদামে আনা-নেওয়ায় পরিবহন ও শ্রমিক খরচে উল্টো লোকসান গুনতে হয়। এসব কারণে সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে আগ্র্রহ বাড়ছে না কৃষকদের। বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া গ্রামের কৃষক আবদুর রহিম বলেন, ‘সরকারি খাদ্য বিভাগে ধান বিক্রিতে গুদাম কর্মকর্তাকে টাকা না দিলে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। অনেক সময় ধান নিয়ে ফেরত আসতে হয়। লাভের চেয়ে লোকসান গুনতে হয়। তারচেয়ে ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা আরও বেশি দামে কিনে নেয়।

মিলারদের কাছ থেকে কেজিপ্রতি ৪৪ টাকা দরে আতপ চাল কিনছে খাদ্য অধিদপ্তর। আর সিদ্ধ চাল কিনছে ৪৫ টাকা দরে। এবার আতপ চালের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৮ হাজার ৮১০ দশমিক ৫০০ মে. টন। তার বিপরীতে গতকাল পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ৬ হাজার ৯৫৫ দশমিক ৪৭ টন। সিদ্ধ চালের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৬৭০ টন। সংগ্রহ হয়েছে ৪০৪ টন।

জেলার সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি ও পটিয়া উপজেলার মিলারদের কাছ থেকে সিদ্ধ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। অন্যান্য উপজেলা সিদ্ধ চালের মিল না থাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ধানও বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে কেনার সিদ্ধান্ত হয়।

চাল ব্যবসায়ী ও মিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে আতপ চালের দাম অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে কেজিপ্রতি ৩৬-৪০ টাকার মধ্যে আতপ চাল বিক্রি হচ্ছে। লাভ পাওয়ায় এবার খাদ্য অধিদপ্তরকে চাল সরবরাহে আগ্রহ বেড়েছে মিলারদের।

চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাজারে মোটা চালের দাম মোটামুটি ভালো। সরকারের নির্দেশনায় আতপ চালের সংগ্রহ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। তাই এবার খাদ্য অধিদপ্তরে চাল সরবরাহে আগ্রহ বেড়েছে মিলারদের।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *