জাতীয়

লাল পাসপোর্ট বাতিল হলে কি করবেন শেখ হাসিনা?

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় এবং দেশত্যাগ করেন তিনি। এরপর থেকেই লাল পাসপোর্ট বা কূটনৈতিক পাসপোর্টের ভিত্তিতে ভারতে বৈধভাবে অবস্থান করছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এই পাসপোর্টের সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনও ভিসা ছাড়াই অনায়াসে ভারতে অবস্থান করতে পারবেন।

তবে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য বা এমপি এবং বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো ও চুক্তি বাতিল হওয়া কর্মকর্তাদের লাল পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এছাড়া পাসপোর্ট অধিদপ্তর তাদের পাসপোর্ট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

তবে ৪৫ দিনের আগে লাল পাসপোর্ট বাতিল হলে বিকল্প চিন্তা করতে হবে শেখ হাসিনাকে। একই সঙ্গে ভারতকেও এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। সেক্ষেত্রে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান বৈধ বলে গন্য হবে না।

এমন প্রতিস্থিতিতে কি করবেন বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ভারত কি তাকে ফেরত পাঠাবে নাকি রাখবে এই চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

লাল পাসপোর্ট কি?

সাধারণত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও এমপি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা লাল পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন। যেটিকে কূটনৈতিক পাসপোর্ট বলা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, উচ্চতর আদালতের বিচারপতি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সচিব, সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এবং বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের কর্মকর্তারাও এই পাসপোর্ট পান।

লাল পাসপোর্টধারীদের বিদেশ ভ্রমণের জন্য কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না। তারা সংশ্লিষ্ট দেশে অবতরণের পর অন অ্যারাইভাল ভিসা পান। কূটনৈতিক পাসপোর্ট সব দেশেই লাল রঙের হয়ে থাকে। তবে এ মুহূর্তে দেশে কত সংখ্যক লাল পাসপোর্ট রয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।

লাল পাসপোর্টধারীরা ৪৫ দিন ভিসা ছাড়াই বসবাস করতে পারেন। এই পাসপোর্টের সুবাদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিসা ছাড়া ভারতে অবস্থান করছেন।

২০১৮ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘সংশোধিত ট্রাভেল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। তাতে উল্লেখ আছে, উভয় দেশের ডিপ্লোম্যাটিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের ৪৫ দিনের মেয়াদে ভিসা ছাড়াই বসবাসের জন্য (ভিসা ফ্রি রেজিম) থাকতে দিতে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে রাজি হয়েছে।

এছাড়া ভারতের সরকারি কর্মকর্তাও জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার যে পাসপোর্ট রয়েছে, সেটির সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনো ভিসা ছাড়া ভারতে অবস্থান করতে পারেন।

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন ১৭ দিন আগে। আরও ২৮ দিন তিনি ভিসা ছাড়া ভারতে অবস্থান করতে পারবেন। তবে এ সময়ের আগে যদি তার লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যায়, তাহলে তাকে বিকল্প চিন্তা করতে হবে। একই সঙ্গে ভারতকেও এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে।

দেড় মাস পার হওয়ার আগেই যদি শেখ হাসিনার বর্তমান পাসপোর্ট ‘রিভোক’ বা বাতিল করা হয়, তাহলে ভারতের কী করণীয় আছে?

এ বিষয়ে দিল্লিতে একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার ভাষ্য, শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হওয়াটাও বড় কোনও সমস্যা নয়, কারণ এই ধরনের পরিস্থিতিতে ভারতের সবসময় ‘প্ল্যান বি’ বা ‘প্ল্যান সি’ প্রস্তুত থাকে। এবং শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এমন কিছু পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *