শিল্পী, শিল্পকর্ম ও স্থাপনায় আক্রমণের প্রতিবাদে শিল্পী সমাবেশ
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, শিল্পী ও শিল্পকর্ম স্থাপনাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির সামনে সমাবেশ করেছেন শিল্পীরা। বিকেল ৪টার দিকে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশ করেন তাঁরা।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অভিনয়শিল্পী আজাদ আবুল কালাম, মুনমুন আহমেদ, কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, ত্রপা মজুমদার, নাজনীন হাসান চুমকি, মোহাম্মদ বারী, নির্মাতা রেদওয়ান রনি, আলোক নির্দেশক ঠাণ্ডু রায়হান, সংগীতশিল্পী অভিনেতা সাইফুল ইসলাম জার্নাল, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষক মানামী তানজানা অর্থিসহ অনেকে।
বক্তব্যে বলা হয়, ‘আজ আমরা এখানে বিজয়ের উৎসব পালনে আসিনি। বরং অত্যন্ত উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা প্রকাশে এসেছি। দীর্ঘদিনের ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, সাবেক ক্ষমতাসীন দল মুখস্ত বুলির মতন যে ভয়ের জুজু দেখিয়ে ফিরত, তা-ই যেন খুব পরিকল্পনামাফিক বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস আক্রমণ, ভাস্কর্য, শিল্পকর্ম ভাঙচুর, থিয়েটার দলের ওপর আঘাত এবং জ্বালাওপোড়াও চলছে নির্বিচারে।.. শাসন ও শাসক দলের বদলের ক্রান্তিকালে ভয়াবহ নৈরাজ্য ও অরাজকতা সৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা সব সময়ই থাকে। প্রশাসনিক অস্পষ্টতা, শূন্যতা এবং সিদ্ধান্তহীনতার সুযোগে দুষ্কৃতকারীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটতরাজ চালানো শুরু করে। এ পর্যন্ত ৭টির মতন থিয়েটার দল পুড়িয়ে দেওয়ার খবর পাচ্ছি। প্রাচ্যনাটের থিয়েটারকর্মী ও জলের গানের মূল সমন্বয়ক রাহুল আনন্দের বাড়ি এবং তাঁর সকল বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা শুধু নিন্দা বা উদ্বেগের নয়, আক্ষেপেরও বটে।… আজ (গতকাল) পর্যন্ত আমরা জানি যে সারা দেশে পুলিশের অনুপস্থিতি বজায় আছে এবং সেনাবাহিনীর টহলও নির্দিষ্ট কিছুসংখক এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘোরতর আশঙ্কা করছি আমরা। আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার হবে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।’