জাতীয়

সংখ্যানুপাতিক ও একাধিক দিনে ভোটের প্রস্তাব বিদায়ী সিইসির

সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল যাওয়ার আগে নির্বাচন ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে দুটি প্রস্তাব রেখে গেলেন। এর একটি হচ্ছে সংখ্যানুপাতিক সংসদ নির্বাচন ও একাধিক দিনে ভোটগ্রহণ।

বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব শফিউল আজিমের হাতে তুলে দেন। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররাও পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে সচিবের কাছে দেন। সচিব রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র তুলে দেবেন। পদত্যাগের আগে এক লিখিত বক্তব্যে তার কমিশনের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, বর্তমান ও অতীত থেকে আহরিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও উপলব্ধি থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাবনা সরকারের সদয় বিবেচনার জন্য রেখে যাওয়া কর্তব্য মনে করছি। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সমরূপতার কারণে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (দলীয় ভিত্তিক) নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আদর্শক্ষেত্র হতে পারে। সেই সঙ্গে নির্বাচন চার বা আটটি পর্বে, প্রতিটি পর্বের মাঝে ৩৫ দিনের বিরতি রেখে, অনুষ্ঠান করা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে সহজ ও সহায়ক হতে পারে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রবর্তিত অনলাইনে নমিনেশন দাখিল অব্যাহত রেখে নির্বাচন পক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপটিমাইজ করতে পারলে উত্তম হবে। প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হলে উদ্দেশ্য অর্জন আরও সুনিশ্চিত হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দু’বছর সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের ৯৯২টি, উপজেলা পরিষদের ৪৯৬টি, জেলা পরিষদের ৭১টি, পৌরসভার ৯০টি এবং সিটি কর্পোরেশনের ১৬টি নির্বাচন করেছে। নির্বাচনগুলোর সততা, নিরপেক্ষতা ও অবাধ হওয়া নিয়ে অতীতের মতো ব্যাপক বিতর্ক বা সমালোচনা হয়নি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, উপ-নির্বাচনসহ জাতীয় সংসদের মোট ৩১৮টি আসনে কমিশন নির্বাচন করেছে। দলীয়ভাবে ইনক্লুসিভ না হওয়ার কারণে নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। এটি সঠিক ও যৌক্তিক। কিন্তু বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোন নির্বাচন কমিশন সংবিধান উপেক্ষা করে স্বেচ্ছায় নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেছে এবং সেই কারণে নির্বাচন হয়নি এমন উদাহরণ নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, সরকার বারবার বলছে ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। নির্বাচন বারংবার ব্যর্থ হওয়ার প্রকৃত সত্য ও কারণ এই কথাটির মধ্যেই নিহিত।

তিনি আরও বলেন, কমিশনের সদস্যরা সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আমাদের কর্মকালে আমরা গণমাধ্যম, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীসহ আবশ্যক সকলের সহযোগিতা পেয়েছি। কৃতজ্ঞচিত্তে তা স্মরণ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *