চট্টগ্রামবন্দর

১৬ কোটির সেই গাড়ির নিলামে দর উঠলো ৪ কোটি টাকা

ব্র্যান্ড নিউ মার্সিডিজ বেঞ্জের (AMG G63) সংরক্ষিত মূল্য ১৬ কোটি ১০ লাখ ৮৯ হাজার ১৩৬ টাকা ধরা হলেও কাস্টম হাউসের নিলামে সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৪ কোটি ১ লাখ টাকা। ৫ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার ৩৪০ টাকা সংরক্ষিত মূল্যের ল্যান্ড ক্রুজারের দর উঠেছে সর্বোচ্চ ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

দেশের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আহরণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অনলাইন নিলামের চিত্র ছিল এমনই।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার একজন কর্মকর্তা।

তিনি জানান, অনলাইনে প্রাপ্ত দর নিলাম কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। সভায় সিদ্ধান্ত হবে বিডাররা গাড়ি ছাড় নিতে পারবেন কিনা।
গত ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৪৫ লটের এ নিলামের প্রস্তাবিত মূল্য অনলাইনে গ্রহণ করে কাস্টম হাউস। এর মধ্যে ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর নিলামের পণ্য বিডারদের দেখার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

নন হাইব্রিড ব্র্যান্ড নিউ মার্সিডিজ বেঞ্জের নিলামে অংশ নিয়েছে চারটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি। এর মধ্যে ছিল যমুনা শিপ ব্রেকার্স, মেসার্স মাসুম এন্টারপ্রাইজ, একেএম নিট ওয়্যার লিমিটেড।

ল্যান্ড ক্রুজারের নিলামে অংশ নিয়েছে ১৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে হ্যারি ফ্যাশন লিমিটেড, এসএ ট্রেডিং অ্যানড্ কোম্পানি, এনায়েত রশিদ, বাংলা কারস, মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, মেসার্স হোসাইন অ্যান্ড হাসান ট্রেডিং, মেসার্স মাসুম এন্টারপ্রাইজ, বিল্ড বেস্ট, মো. শামিম ইসলাম, হ্যারি ফ্যাশন লিমিটেড, ম্যাক্সিম অ্যাসোসিয়েটস, শাহ আমানত ট্রেডিং, এসএইচ এন্টারপ্রাইজ, নুরুল আজিম ও মো. নাহিদ হাসান।

নিলামে ছিল নানা ধরনের নিটেড, ওভেন, নন ওভেন, পলিয়েস্টার, ডায়েড, কটন, রেয়ন, ডেনিম ফেব্রিকস, লেডিস সু সোল, সিরামিরাকের ফুলদানি, ক্র্যাফট কার্টন, পিভিসি শিট, পার্টস অব অ্যান্টি শপলিফটিং সিস্টেম, ডাইসোডিয়াম সালফেট, পুরোনো কম্বল, কাপড়, ইঞ্জিন অয়েল, টাইলস, সিকিউরিটি ট্যাগ ইত্যাদি। এ নিলামে ৭২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৭৬ টাকা সংরক্ষিত মূল্যের আনারস, আপেল, আম, পেয়ারার জুস, স্ট্রবেরি ড্রিংকস তোলা হয়। তবে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, যেসব চালানের পণ্য আমদানিকারকেরা খালাস নেন না, ব্যবহার উপযোগিতা থাকে সেগুলো নিলাম করা কাস্টম হাউসের রুটিন কাজ। যেসব পণ্য নষ্ট হওয়ায় ব্যবহার উপযোগিতা হারিয়েছে কিংবা বিপজ্জনক সেগুলো ধ্বংস করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ২ হাজার ৭৬৮টি ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনারে ৪৪ হাজার ২৮৮ টন, ৩ হাজার ১৭০টি ৪০ ফুট দীর্ঘ পণ্য ভর্তি কন্টেইনারে ৬৩ হাজার ৪০০ টন পণ্য রয়েছে। যেগুলো আমদানিকারকরা ছাড় না করায় দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে পড়ে রয়েছে। এছাড়া ৩ হাজার ৩৯০ টন ওজনের ৭০ হাজার ৩৯০ প্যাকেজ এলসিএল কার্গো এবং ৫ হাজার ৪৫০ টন ওজনের ৬ হাজার ৮৪৬ প্যাকেজ খোলা (বাল্ক) পণ্য রয়েছে নিলামের জন্য কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিলাম ও পণ্য ধ্বংস কার্যক্রমে ধীরগতির কারণে একদিকে ডলারে আমদানি করা পণ্যের ব্যবহার উপযোগিতা হারাচ্ছে। অন্যদিকে শিপিং এজেন্টের কনটেইনার আটকা পড়ছে বছরের পর বছর। পাশাপাশি এসব কনটেইনার ও কার্গোর কারণে মূল্যবান ইয়ার্ডের জায়গা ও রেফার কনটেইনারে বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন্দরও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *