জাতীয়

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে হামলা, আহত ১০

বরিশাল: ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে প্রবেশ করে সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা গাছ ফেলে ঘণ্টাখানেক বরিশাল-ভোলা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৮টায় বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের দুর্গাপুর এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনায় ১০-১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন। রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত সিফাত হাসান (২২ ), আশিকুজ্জামান সজীব (২২) ও আতিক শাহরিয়া নামে তিনজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা বলছেন, মিছিলে না যাওয়ায় তাদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে প্রতিপক্ষ ছাত্রদের একটি পক্ষ। আবার যে পক্ষের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে তাদের দাবি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে হামলার চেষ্টাকালে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে। তবে কলেজ প্রশাসন বলছে রাতের বেলায় দুর্বৃত্তরা তাদের ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে হামলার ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ খলিল উদ্দিন জানিয়েছেন, হলে প্রবেশ করে সন্ত্রাসীরা হামলা করে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। তবে ঘটনার সময় তিনি সেখানে না থাকায় কারা হামলা চালিয়েছে তা জানেন না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আতিক শাহরিয়ার বলেন, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভোকেশনাল ও পলিটেকনিকের কোটা বাতিলের দাবিতে গত বুধবার থেকে তারা আন্দোলন করছেন। সোমবার কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করতে এসেছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। তার আগমন উপলক্ষে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত রেখে মিছিলে অংশ নিতে বলেন কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা সাকিব ভুইয়া।

শাহরিয়ার আরও বলেন, মিছিলে অংশ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তারা ক্ষিপ্ত হন। এ নিয়ে বিকেলে তর্ক-বির্তক হয়। তখন আমাদের ওপর হামলারও চেষ্টা করা হয়। তখন নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কলেজ অধ্যক্ষের কাছে বিচার দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, সাকিব ভুইয়ার নেতৃত্বে কলেজের ১০/১২ শিক্ষার্থীসহ বহিরাগত ২০/২৫ জন রামদা, স্টাম্প, লাঠিসোঁটা নিয়ে রাত আটটার দিকে ছাত্রাবাসে হামলা করে। তারা অন্তত ১০-১২ জন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে।

কলেজ ছাত্রলীগের নেতা সাকিব ভুইয়া বলেন, কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল হতে দিতে চায়নি বিএনপি-জামায়াতের একটি পক্ষ। তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে ম্যুরাল ভাঙার চেষ্টা করে। তখন প্রতিরোধ করলে মারামারি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, যাদের মিছিলে যেতে বলা হয়েছিল, তারা না গিয়ে গালাগাল করে। আর সেই গালাগালের সূত্র ধরেই হামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি।

স্থানীয় চাঁদপুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এইচএম জাহিদ বলেন, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্রদের এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা করেছে। এ ঘটনার বরিশাল-ভোলা সড়কে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। এক ঘণ্টা পর পুলিশে এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেছে।

বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, প্রাথমিকভাবে যেটুকু জানা গেছে, তাতে কলেজে দুটি গ্রুপ রয়েছে। এক গ্রুপ হলে এসে অপর গ্রুপের ওপর হামলা করেছে। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। তাদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। হামলার কারণ কলেজ কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *