সেহরি-ইফতারের পর ধূমপান করা যাবে?
ধূমপানের বিধান নিয়ে আলেমদের মধ্যে দু্ই ধরণের মতামত রয়েছে। কেউ সরাসরি হারাম বলেন, আবার কেউ মাকরুহ বলেন। তবে যাই হোক এটি সর্বজনস্বীকৃত বিষয় যে, ধূমপান কোনো ভালো কাজ নয়। এছাড়া ধুমপায়ীর মুখের দুর্গন্ধে অন্যের কষ্ট হয়, যা পৃথক একটি গুনাহ। তাই ধুমপান থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।কোনো মুমিন ধূমপান করে অন্যকে কষ্ট দিতে পারে না। রাসূল সা. বলেছেন, কেউ অপরের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)।
আর ধূমপানের কারণে মুখ দুর্গন্ধযুক্ত হলে, এ অবস্থায় নামাজে দাঁড়ানো মাকরুহে তাহরীমী। বরং এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাও মাকরুহ।
স্বাভাবিক অবস্থায় ধূমপান করা মাকরুহ হলেও রোজা রেখে ধূমপান করা যাবে না। এতে করে রোজা ভেঙে যাবে। একইসঙ্গে রোজার মাসে ইফতার ও সেহরির পর ধূমপান থেকে বিরত থাকা জরুরি।
কারণ, রোজা অবস্থায় যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। অন্যথায় রোজার কোনো সওয়াব আল্লাহর কাছে পাওয়া যাবে না।
মনে রাখতে হবে রোজা একজন ব্যক্তির উপর বিভিন্ন আচরণগত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। মিথ্যা কথা বলা, পরনিন্দা, পরচর্চা, ধোঁকা দেওয়া, প্রতারণা করা, হিংসা-বিদ্বেষ, অশ্লীলতা- এসব কর্মকাণ্ড এমনিতেই নিষিদ্ধ। আবার রোজা পালনকালে এগুলো পরিহার করা বেশি জরুরি।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল সা. ইরশাদ করেন,
مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯০৩)
কাজেই তাকওয়ার পরিচায়ক হল, রোজাদার সিগারেট খাওয়া থেকেও বিরত থাকবে। যেন তার রোজা আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার অধিক নিকটবর্তী হয়। তবে সিগারেট খেলেও রোযার ফরজিয়্যাত আদায় হয়ে যাবে।