অভিযান চললেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই বড় মনির
একের পর এক ধর্ষণ কাণ্ডে আলোচিত টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরকে ধরতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে তিনি পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পলাতকই রয়েছেন। তবে পুলিশ আশা করছে, অস্ত্রের মুখে কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত বড় মনিরকে দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।
শুক্রবার রাতে তুরাগ থানার প্রিয়াঙ্কা সিটি আবাসিক এলাকায় বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তাকে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে মামলায় বড় মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে ওই ছাত্রী।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার মো: ফারুক হোসেন বলেন, এই আসামিকে গ্রেপ্তার করার জন্য যে ধরনের অভিযান চালানো দরকার, সেটা তুরাগ থানা করছে।
‘বড় মনির ব্যবসায়ী প্লাস রাজনীতিবিদ। তিনি টাঙ্গাইলের বাস মালিক সমিতির সভাপতি। অস্ত্রের মুখে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে এমন অভিযোগ দেওয়ার পরই ওসি সেটা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে,’ যোগ করেন তিনি।
শুক্রবার রাতে ট্রিপল নাইনে আসা একটি ফোন কলের সূত্র ধরে বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে সে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বড় মনির।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ‘আমাকে অস্ত্র দেখিয়ে জোর করে বাসায় নিয়ে গেছে।’ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরের পরই ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়। ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে পুলিশ।
বড় মনির হলেন টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই। বড় মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু আইনের বেড়াজাল ভেঙে কীভাবে মনির পরিবার এসব কাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে।
গত বছর টাঙ্গাইলে এষা নামে আরেক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং তারপর জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগও আনা হয় বড় মনিরের বিরুদ্ধে। এষার দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় বড় মনির গ্রেপ্তার হয়। এরপর কারাগারে বসেই এষাকে হত্যার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে তখন টাঙ্গাইলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েও পায়নি এষা।
শেষ পর্যন্ত এষার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। অথচ এই ঘটনায় বড় মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে উলটো নিহত এষার এক বন্ধুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
টাঙ্গাইলের নিক্সন হত্যার সাথেও বড় মনি জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এতো কুকাণ্ডের পরও বড় মনিরের পেছনো কোন শক্তি কাজ করছে, যে তার টিকিটিও ধরা ছুঁতে পারছে না আইন।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলছেন, পুলিশের কোনো সদস্যদের পক্ষে আইনের বিষয় এড়িয়ে চলা সম্ভব না।