দেশজুড়ে

নির্বাচনী সভায় এমপির স্ত্রীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রসিকতা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্বাচনী জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদর আসনের দলীয় প্রার্থী ও দলটির জেলা সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর কাছে তাঁর স্ত্রীর পরিচয় জানতে চেয়ে রসিকতা করেছেন। মোকতাদির চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর দুই দফা প্রশ্নে স্ত্রীর পরিচয় দেন। এ ঘটনায় হাসিতে ফেটে পড়েন উপস্থিত নেতাকর্মীরা।

জনসভায় সামনের সারিতে বসা বিশেষ লোকদের একে একে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী এমপি। তবে পাশে বসা স্ত্রীর পরিচয় দেননি তিনি। বিষয়টি খেয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মোকতাদির চৌধুরীকে ডেকে বলেন, ‘এই তোমার পাশে একজন নারীকে বসা দেখি, উনার পরিচয় তো পেলাম না।’

তখন মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘উনি প্রফেসর ফাহিমা খাতুন। উনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার নিয়োগ দেওয়া ট্রেজারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উনি আগে মাউশির মহাপরিচালক ছিলেন।

জবাব শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসতে হাসতে বলেন, ‘ওহ্ আচ্ছা, আর কোনো পরিচয় নেই?’

এ পর্যায়ে এমপি মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘আমার সহধর্মিনী তিনি। এটা আপনি জানেন। আরও পরিচয় জানতে চাইলে বলব, উনি কামরুল ইসলাম সাহেবের (আওয়ামী লীগে নেতা ও সাবেক মন্ত্রী) ছোট বোন। উনি (কামরুল) আপনার প্রার্থী।এসময় জনসভায় যোগদানকারী সবাই হাসতে থাকেন। সভায় মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

দলের প্রার্থীদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে জনসভার সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘আপনি আমাকে পুনরায় মনোনয়ন দিয়েছেন, এজন্যে আপনাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। এখানে আমরা ৫ জন নৌকা মার্কার প্রার্থী আছি। একটি সিট আপনি অন্যদের ছেড়ে দিয়েছেন।’ এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া–৪ আসনের অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া–৬ আসনের ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া–৫ আসনের মো. ফয়জুর রহমান বাদল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া–১ আসনের ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি।

এসময় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনগণ মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই দেশের জন্যে রক্তদান করে দেশটাকে মুক্ত করেছেন। এই নারীরা তখন আমাদের সহযোগিতা করেছিলেন। গ্রামেগঞ্জে সহযোগিতা করেছিলেন। সেই নারীর উপস্থিতি আজকে দেখেন। যারা ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ভিন্নভাবে চিত্রিত করতে চায়, আপনি আজকে সেই নারীদের এত উপস্থিতি; আপনি যতগুলো সভায় অ্যাটেন্ড করেছেন কোথাও এতো উপস্থিতি দেখেছেন কিনা, জানি না। আমাদের নারী নেত্রীরা অত্যন্ত পরিশ্রম করে এখানে উপস্থিতি দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে মাঠে দাঁড়িয়ে আপনার সঙ্গে মিলিত হয়েছি সেটা হলো নিয়াজ মুহম্মদ স্কুল মাঠ। এটার পাশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে আপনি ১০ তলা বিল্ডিং দিয়েছেন, অ্যাকাডেমিক ভবন দিয়েছেন। ৬তলা অ্যাকাডেমিক ভবন দিয়েছেন। আমাদের শ্রদ্ধেয় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে নারীদের একটি হোস্টেল দিয়েছেন। আপনি এই নিয়াজ মুহম্মদ স্কুলের বিল্ডিং করে দিয়েছেন। একটা না অনেকগুলো। আমরা একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চাই এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। আমরা একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ চাই। একটা সরকারি কৃষি কলেজ চাই। আরেকটা স্টেডিয়াম চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *