দেশজুড়ে

আমার এই ছোট ছোট চার সন্তান নিয়ে এখন কোথায় যাব?

লক্ষ্মীপুর: পারভীন বেগম (৩৮) তার অটোরিকশা চালক স্বামী মো. হাসান ও চার সন্তান নিয়ে তিন বছর ধরে বাবার ঘরে বসবাস করে আসছেন। ঘরের ভিটা নিজের দাবি করে পারভীনের আপন ফুফু সোহাগী বেগম ওই বসতঘরটি পুরোপুরি ভেঙে ফেলেছেন। এখন খোলা আকাশের নিচে ছোট ছোট চার শিশু সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পারভীন-হাসান দম্পতি।

বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, পারভীন বেগম তার সন্তান ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ঘরের ভিটের ওপর দুপুরের খাবার খাচ্ছেন। তাদের বসতঘরটি নেই, শুধু ভিটেমাটি পড়ে আছে। তারা জানান, পারভীনের ফুফু সোহাগী বেগম ভিটের জমির মালিকানা দাবি করে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে ঘরটি ভেঙে ফেলেছেন। ঘরের আসবাবপত্র এবং বিভিন্ন আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সব নিয়ে গেছেন। এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে তাদের। আবার সেই ভিটে থেকে উচ্ছেদের কৌশল হিসেবে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিয়ে বাড়িতে পুলিশও নিয়েছেন।

পারভীন বেগম বলেন, ঘটনার তিন দিন আগে আমার ফুফু সোহাগী এসে আমার সঙ্গে ঝগড়া করেছেন। আমার মেয়েটাকেও মারধর করেছেন। হুমকি দিয়ে গেছেন। নিরাপত্তার অভাবে আমি আমার চার সন্তানকে নিয়ে অন্য স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। গত শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এসে দেখি বসত-ভিটেয় থাকা ঘর নেই। আমি এখন ছোট ছোট চার সন্তান নিয়ে কোথায় যাব?

একই বাড়ির কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, বাড়িতে সোহাগীর ঘর থাকলেও তিনি এ বাড়িতে থাকেন না। জেলা শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন৷ তার ভাই আবু তাহের যে বসতভিটায় থাকতেন, সেটি আবু তাহেরেরই। কিন্তু হঠাৎ করে সোহাগী তার বসতঘরটি লোকজন এনে ভেঙে দিয়ে যান। তিনি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। শুধু তাই নয়- সোহাগী নিজের আত্মীয়-স্বজনসহ বাড়ির লোকজনকে হয়রানি করে আসছেন। কথায় কথায় তিনি লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাজানো অভিযোগ দেন। অন্যদিকে বসতঘর ভাঙার পরদিন রোববার (২৪ ডিসেম্বর) আবু তাহের পুনরায় ওই ভিটের মধ্যে ঘর তুলতে গেলে সোহাগী জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ উদ্দিন বলেন, ৯৯৯-এ কল পাওয়ার পর আমি ঘটনাস্থলে যাই। সোহাগী অভিযোগ করেছেন, তার ভাই ওই জমিতে বসতঘর তৈরি করছেন। তিনি কল দিলেও ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। আমি দুইপক্ষকে জমির কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *