ঈদের ছুটিতে চুরি কম, মারামারি বেশি
চট্টগ্রাম নগরের অধিকাংশ বাসিন্দা স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে চলে যান গ্রামের বাড়ি। এবার নববর্ষের ছুটি মিলিয়ে দীর্ঘ আট দিন ছুটি মেলে সবার। ফলে প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় নগর। ফাঁকা নগরে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনায় আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় বিষাদে। প্রতিবার ঈদে বাসার গ্রিল কেটে, দরজা ভেঙে চুরির ঘটনা, ফাঁকা রাস্তায় ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও এবারের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। ঈদের ছুটিতে নগরজুড়ে চুরির ঘটনা কম, বেশি ছিল মারামারি! তবে ব্যতিক্রম ইপিজেড থানা। এখানে মামলা হয়নি একটিও।
ঈদ-নববর্ষের ছুটিতে নগরের ১৪টি থানায় মামলা হয়েছে ৪০টিরও বেশি। এর মধ্যে চুরির মামলা হয়েছে অন্তত ৫টি, মারামারি সংক্রান্ত ১০টি। এই সময়ের মধ্যে নগরের বিভিন্ন থানায় মাদকের মামলা হয়েছে ৬টি। এছাড়া আছে হত্যা, ছিনতাই, প্রতারণা, চাঁদাবাজি, নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, দস্যুতা ও পর্নোগ্রাফির মামলাও। আবার, এই ছুটিতে একটিও মামলা হয়নি— রয়েছে এমন থানাও।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদ এবং বাংলা নববর্ষের ছুটিতে নগর ফাঁকা থাকায় অনেকাংশেই কমেছে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য। পাশাপাশি ঈদকে ঘিরে নগরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার ছিল। ফলে, ছোটখাটো কয়েকটি ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটেনি এবার ঈদের ছুটিতে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, খুলশী ও বায়েজিদ বোস্তামি থানায় ঈদের ছুটিতে মোট মামলা হয়েছে ১২টি। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মারামারির ঘটনায়। দুটি মামলা হয়েছে মাদক সংশ্লিষ্ট। এছাড়া চাঁদাবাজি, অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, প্রতারণা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে একটি করে।
ঈদের ছুটিতে অপরাধ কমে আসার কারণ জানিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সুলতানা সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘ঈদের সময় ফাঁকা নগরীতে অপরাধ ঠেকাতে আমরা বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। এছাড়া বাসিন্দাদের জানিয়েছিলাম তারা যেন শহর ছাড়ার আগে বাসা সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করে যায়। এছাড়া আমরা অনেক জায়গায় টেম্পরারি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর চেষ্টা করেছি। আমরা আগে থেকে যেহেতু জনগণকে সচেতন করেছি সেহেতু অপরাধের পরিমাণ অনেক কমে গেছে।’
মামলা কম হওয়ার আরেকটি কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকসময় দেখা যায় মানুষ অভিযোগ করতে আসে না ঈদের সময়। ঈদের অনেক পরেও আসে। তবে ঈদের ছুটির পরে অভিযোগ করলেও আমরা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিই আমরা। একেবারেই যে অকারেন্স হয়নি এমনটা নয়।’