একটি ভবন উদ্বোধনেই সাড়ে ৪৪ লাখ টাকা খরচ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভবন উদ্বোধনেই ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা খরচ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের একাডেমিক ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ খরচ দেখানো হয়েছে। তবে এ খরচ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নানা সমালোচনা। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা এটির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বলছেন, ভবন উদ্বোধনে এত টাকা খরচ করা অস্বাভাবিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি দপ্তরের নথিপত্রে দেখা যায়, ভবনটি উপলক্ষে উপাচার্যের নির্দেশে দুই দফায় টাকা নিয়েছেন প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার। প্রথম দফায় টাকা নেন ৩০ মে। ওই দিন পরিকল্পনা উন্নয়ন দপ্তরের এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষামন্ত্রীর সফর উপলক্ষে গঠিত কমিটির সদস্যসচিবকে (প্রক্টর) ৩৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়ার জন্য উপাচার্য শিরীণ আখতার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন টাকা তোলেন প্রক্টর।
আর দ্বিতীয় ধাপে টাকা নেন ১৮ সেপ্টেম্বর। ওই দিন হিসাব নিয়ামক দপ্তরকে দেওয়া এক চিঠিতে প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার উল্লেখ করেন, ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য যে ৩৩ লাখ টাকা তিনি নিয়েছিলেন তা দিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়নি। দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও আনুষঙ্গিক অতিরিক্ত খরচের কারণে আরও ১১ লাখ টাকা প্রয়োজন। অর্থাৎ ভবন উদ্বোধনের খরচ হয়েছে ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
‘ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে এ ভবন। এতে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস, ফিশারিজ ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের একাডেমিক অবকাঠামোর সুবিধা রয়েছে। এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ কোটি টাকা। নির্মাণ শেষে গত এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়কে কাজ বুঝিয়ে দেন ঠিকাদার। পরে ৪ জুন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এর উদ্বোধন করেন।
ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে ৪৪ লাখ টাকা কোন কোন খাতে খরচ করা হয়েছে তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন মো. শফিকুল ইসলাম ও সদস্যসচিব নূরুল আজিম সিকদারের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন প্রতিবেদক। তবে তাঁরা কেউই নির্দিষ্ট কোনো হিসাব দিতে পারেননি।