শিক্ষা

করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর দেশের মাধ্যমিক স্তরে ৪ বছরে ১০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী কমেছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) একটি জরিপ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর আগের বছর ২০১৯ সালে দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ছিল ৯২ লাখ ৩ হাজার ৪২৭ জন। আর ২০২৩ সালে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১ লাখ ৬৬ হাজার ১৮৮ জনে। এই ৪ বছরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১০ লাখের বেশি। মাধ্যমিকে কমে যাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ শতাংশই ছাত্রী। এই শিক্ষার্থীরা দেশের ১৮ হাজার ৯৬৮টি বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো।

জরিপকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ধারণা, করোনা সংক্রমণের পর মাধ্যমিক স্তরে ভর্তি কমে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকালে রাজধানীর পলাশীতে দেশের মাধ্যমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান সংগ্রহ, সংকলন ও বিতরণকারী সরকারি সংস্থা ব্যানবেইস কার্যালয়ে জরিপ প্রতিবেদন নিয়ে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যানবেইসের জরিপ শাখার প্রধান শেখ মো. আলমগীর জানান, সাধারণত ১১ থেকে ১৫ বছরের বাচ্চারা মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোও (বিবিএস) বলছে এই পর্যায়ের জনসংখ্যা কমেছে। আগামী বছর এই সংখ্যা আরও কমবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে তারা শুধু পরিসংখ্যান সংগ্রহ করেছেন। কেন কমেছে তার কারণ অনুসন্ধান করা হয়নি জরিপে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান বলেন, আমরা শুধু বেসিক তথ্য সংগ্রহ করেছি। ভবিষ্যতে বিষয়গুলো দেখা হবে। করোনা প্রতিঘাতের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। তাদের ক্লাস রুমে ফিরিয়ে আনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষার্থী কমলেও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজারের মতো বেড়েছে। একই সময়ে মাদ্রাসায় প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী বেড়েছে। একইভাবে কারিগরি ও ইংরেজি মাধ্যমেও শিক্ষার্থী বেড়েছে। আর গত কয়েক বছরে ঝরে পড়ার হার কমেছে। ২০১০ সালে ঝরে পড়ার হার ছিল ৫৫ দশমিক ২৬ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশে।

জরিপের তথ্যানুযায়ী, প্রাথমিকের পরের স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জরিপের আওতাভুক্ত ছিল। ৩৯ হাজার ৭৮৮টি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, পেশাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (আইন কলেজ, লেদার টেকনোলজি কলেজ ইত্যাদি), মেডিক্যাল কলেজ/নার্সিং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২৩ সালের ৩ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব প্রাথমিকোত্তর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *