জাতীয়

কীভাবে বুঝবেন গ্যাস লিকেজ হয়েছে

প্রতিদিনই গ্যাস ছাড়া আমরা চিন্তাই করতে পারি না। একবেলা চুলায় গ্যাস না থাকলেই অস্থির হয়ে যাই। গ্যাসের চুলা বা সিলিন্ডারের গ্যাস ছাড়া প্রতিদিনের রান্না করা যায় না। গ্যাস না থাকা যেমন চিন্তার বিষয়। গ্যাস থাকাও কিন্তু বড় চিন্তার কারণ। কেননা যেকোনো সময়ই গ্যাস লিক হতে পারে। আর অসাবধনতাবশত ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

যেকোনো ধরণের দুর্ঘটনা এড়াতে গ্যাস ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। মনে রাখবেন, আবদ্ধ জায়গায় গ্যাস লিকেজ হলে জমে থাকা গ্যাস থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। তাই বাড়িতে, কারখানায় কিংবা রেস্টুরেন্টে যেখানে গ্যাসের লাইন ব্যবহার করা হয় সেসব জায়গায় লিকেজ থাকলে তা দ্রুত সারিয়ে নিতে হবে। কীভাবে গ্যাসের লিকেজ বোঝা যাবে আর কী করা যেতে পারে তা নিয়ে কিছু পরামর্শ জেনে নিন।

  • গ্যাস লিকেজের গন্ধ তীব্র হতে পারে। ঘরে পচা ডিমের মতো অস্বাভাবিক গন্ধ হতে পারে। প্রাকৃতিক গ্যাস মূলত কয়েক ধরনের হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ। এটি গন্ধহীন হয়। তবে মার্কেপ্টেন নামক একপ্রকার গান্ধব পদার্থ এতে যুক্ত হলে এর গন্ধ তীব্র হয়। তাই গ্যাস লিকেজ হলে ওই তীব্র গন্ধ পাওয়া যায়। যা থেকে আপনি বুঝে নিতে পারেন কোথাও গ্যাসের লিকেজ রয়েছে।
  • গ্যাস লিকেজ থাকলে হিস হিস শব্দ হতে পারে। ব্যবহৃত সিলিন্ডারে বা পাইপের মধ্যে উচ্চ চাপে গ্যাস আবদ্ধ থাকে। গ্যাস লিকেজ হলে ওই স্থান থেকে গ্যাস বের হয়ে আসে। সেসময় তীক্ষ্ণ হিস হিস শব্দ হয়। তাই আগুন জ্বালানোর আগে সতর্ক হোন। কোথাও তীক্ষ্ণ শব্দ শোনা যায় কিনা খেয়াল রাখুন।
  • গ্যাস লিকেজ হলে ছোট গাছগুলো অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হয়ে যায়। তাই ঘরের বা আশপাশের বাগানের গাছগুলোর দিকে নজর দিন। যদি গাছগুলো নিস্তেজ মনে হয় বা মরে যায় তবে বাড়ির গ্যাসের লাইন চেক করুন। কোথাও গ্যাস লিকেজ হয়েছে কি না তা দেখে নিন।
  • গ্যাস লিকেজের কারণে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। এতে শরীরে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে না। তাই মাথা ঘুরতে পারে, মাথাব্যথা হতে পারে, এমনকি বমি বমি ভাবও হতে পারে। তাই ওষুধ খাওয়ার আগে বাড়ির গ্যাসের লাইন লিকেজ কিনা তা চেক করে নিন।

গ্যাস লিকেজ হলে যা করবেন

  • গ্যাস লিকেজ হয়েছে টের পেলে দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ করুন। বাড়ির বাইরে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।
  • বাড়ির বৈদ্যুতিক যন্ত্রের কানেকশনগুলো বন্ধ করে দিন। বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালু করবেন না এবং সুইচ চাপবেন না।
  • ভুলে আগুন জ্বালাবেন না। কারণ জমে থাকা গ্যাসে ছোট্ট আগুন শিখা লাগলেই ভয়াবহ  অগ্নিকাণ্ড হতে পারে।
  • ঘরের দরজা–জানালা খুলে দিন। বাইরের বাতাস ঘরে প্রবেশ করলে বিপদের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
  •  কোথা থেকে লিকেজ হচ্ছে তা শনাক্ত করা গেলে দ্রুত প্রধান সরবরাহের জায়গাটা বন্ধ করে দিন। সিলিন্ডার বা পাইপলাইনের গ্যাস দ্রুত বন্ধ করার ব্যবস্থা করুন।
  • নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস বাহিনীকে খবর দিন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়িতে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখুন।
  • নিয়মিত গ্যাসলাইন রক্ষণাবেক্ষণ করুন। প্রয়োজন ছাড়া গ্যাস লাইন বন্ধ রাখুন।
  • বাড়িতে কার্বন মনোক্সাইড শনাক্তকারী যন্ত্র লাগিয়ে নিতে পারেন। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রও রাখতে পারেন।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *