রাজনীতি

খালেদা জিয়ার বিবৃতিতে খুশি হয়েছি, বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে চাই: জয়

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বর্তমানে ভারতে আশ্রয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। রাজনীতিতে নিজের অবস্থান নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য দেননি তিনি। কিন্তু তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোয় প্রতিনিয়ত নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবারই নিজের দেওয়া বক্তব্য পাল্টাচ্ছেন তিনি।

কিছুদিন আগে বলেন, তার মা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর ফিরবেন না। আবার বললেন, ফিরবেন। এরপর রাজনীতিতে নিজে নামবেন বলে ঘোষণা দেন জয়।

গত বৃহস্পতিবার আবার বললেন, নিজেদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সঙ্গে যাবতীয় দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলবেন। অতীত ভুলে বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে চান জয়।

মার্কিন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানান জয়। তিনি বলেন, আমি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিবৃতিতে খুব খুশি হয়েছি। বিগত দিনগুলো কেটে যাক। তাদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, আসুন অতীত ভুলে যাই। আমরা যেন প্রতিহিংসার রাজনীতি না করি। ঐক্য সরকার হোক বা না হোক আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

জয় আরও বলেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন করতে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে আমি তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাদের শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র আছে, যেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ৭ আগস্ট ঢাকার নয়াপল্টনে সমাবেশ করে বিএনপি। এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন খালেদা জিয়া। মূলত তার এই বক্তব্যকে গ্রহণ করেই জয় বিএনপির সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জয় বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে রাজনীতি ও আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যেমন তর্ক করতে পারি, তেমন কোনো বিষয়ে এক বা ভিন্ন মত পোষণ করতে পারি। সময়ের প্রয়োজনে আমরা একটা সমঝোতায় যেতে পারি।

রয়টার্সকে শেখ হাসিনার অবসরের কথাও জানান জয়। আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার মা যেভাবেই হোক এ মেয়াদের পর অবসর নিতে যাচ্ছেন। দল যদি আমাকে চায়, আমি অবশ্যই বিবেচনা করব।

জয় জানান, বাংলাদেশে বিদ্রোহের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের দাবি অনুসারে তার মা দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের হুমকিতে আমার মা কখনো ভয় পাননি। আমার মা কোনো অন্যায় করেননি। শুধু তার সরকারের লোকেরা বে-আইনি কাজ করেছে। তার মানে এই নয় যে আমার মা আদেশ দিয়েছেন। তার মানে এই নয় যে আমার মা এর জন্য দায়ী।

বিক্ষোভের সময় মানুষকে গুলি করার অনুমতি দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা সরকারের কারা দায়ী, সে বিষয়ে কিছু বলেননি জয়। তবে তার ভাষ্য, একটি সরকারের পেছনে অনেক ষড়যন্ত্র থাকে। যারা দায়ী, তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। আমার মা একেবারেই কাউকে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা করার নির্দেশ দেননি। পুলিশ সহিংসতা রোধের চেষ্টা করছিল। কিন্তু কিছু পুলিশ অফিসার অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে।

তিনি বলেন, আন্দোলনের বিষয়ে নানা আলাপে আমি অংশ নিয়েছিলাম। মাকে বলেছিলেন, আমাদের অবিলম্বে (ছাত্রলীগকে) বলতে হবে আক্রমণ না করতে, সহিংসতা বন্ধ করতে। যেসব পুলিশ ছাত্রদের গুলি করেছে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করেছি। আমরা যা করতে পেরেছি তা করেছি।

জয় বলেন, যখন তার ইচ্ছা তবে দেশে ফিরবেন। আমি কখনো বে-আইনি কিছু করিনি। তাহলে কেউ আমাকে আটকাবে কি করে? রাজনৈতিক দলগুলো কোথাও যাচ্ছে না। আপনারা আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে পারবেন না। আমাদের সাহায্য ছাড়া, আমাদের সমর্থক ছাড়া আপনারা বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনতে পারবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *