আন্তর্জাতিক

গাজায় ৬০টির বেশি মসজিদ বিধ্বস্ত ইসরায়েলি হামলায়

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে ৬০টির বেশি মসজিদ ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ওয়াফা।

এদিকে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গতকাল রোববার গাজার উত্তরাঞ্চলের সাবরা পাড়ায় আল-সালাম মসজিদে বোমা হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আল–সালাম মসজিদ ধ্বংসের মধ্য দিয়ে গত ৩৬ দিনের যুদ্ধে ৬০টিরও বেশি মসজিদ ধ্বংস করল ইসরায়েলি বাহিনী।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে যুদ্ধের সময়েও ধর্মীয় উপসনালয়গুলোকে সাংস্কৃতিক সম্পত্তি হিসেবে সুরক্ষা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা করছে না।

এর আগে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদুলুকে হামাস প্রশাসনের তথ্য দপ্তরের পরিচালক বলেন, গত তিন সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় অর্ধ শতাধিক মসজিদ ধ্বংসের পাশাপাশি দুই শতাধিক স্কুল, ৮০টির বেশি সরকারি কার্যালয় ও ৭টি গীর্জা ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ লাখের বেশি ঘরবাড়ি। পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ৩২ হাজার আবাসিক ভবন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান ও আইন উপেক্ষা করে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গত বৃহস্পতিবার গাজার বুরেজ শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে ১৫জন বেসামরিক ব্যক্তিকে মেরে ফেলেছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এ ছাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সের ওপরেও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

এদিকে অক্সিজেন, ইনকিউবেটর, বিদ্যুৎ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে গাজার সবচেয় বড় দুটি হাসপাতাল—আল শিফা ও আল কুদস।

আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আল–শিফার আশপাশে ব্যাপক লড়াই ও ইসরায়েলি হামলার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন পড়েছে। এমনকি ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতালটির একাংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা ৩ নবজাতক মারা গেছে।

ইসরায়েল বলছে, এসব হাসপাতালের আশপাশে ও মাটির নিচে হামাসের যোদ্ধাদের ঘাঁটি রয়েছে। তাদের নিশ্চিহ্ন করতেই অভিযান চালানো হচ্ছে। হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে না।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়। এ ছাড়া ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে নেওয়া হয়। এরপর থেকে গাজায় টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বাহিনীর অনবরত হামলায় এ পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের প্রায় ৪০ শতাংশই শিশু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *