চট্টগ্রামে ছাত্র আন্দোলনে গুলিবর্ষণকারীরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো দুর্বৃত্তরা এখনও পলাতক রয়েছে। প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এখনও তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেনি বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করাও সম্ভব হয়নি। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ জানিয়েছেন, অস্ত্রধারীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আমরা সবকিছু ঢেলে সাজাচ্ছি। কোনো অস্ত্রধারী ছাড় পাবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়াও জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিকে, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চট্টগ্রামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা দেখেছি। এগুলোর ছবি ও ভিডিও দেখে অস্ত্র উদ্ধার করা দরকার। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি করার জন্য এবং জানমালের নিরাপত্তার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এগুলো উদ্ধার করা দরকার। না হলে এগুলো হাতবদল হতে পারে। আবার অপরাধমূলক কাজে অবৈধ এসব অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে।”
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই বহদ্দারহাটে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শিক্ষার্থী তানভীর ছিদ্দিকীর চাচা মোহাম্মদ পারভেজ বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীসহ দুই কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে।
আরেকটি মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই মুরাদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালায় যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ক্যাডাররা। এর দুই দিন পর ১৮ জুলাই বহদ্দারহাটে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা।
এছাড়া ৪ আগস্ট নিউ মার্কেট, তিনপুলের মাথা, স্টেশন রোড ও আসকারদিঘী এলাকায় ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালানোর ঘটনায় আরও কয়েকজনকে অস্ত্র হাতে দেখা যায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এসব ঘটনায় ছয়জন নিহত এবং আড়াই শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ।