চবিতে জামায়াত নেতার কক্ষে ছাত্রলীগের তালা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ও সুদের ব্যবসার অভিযোগ তুলে তার কক্ষে তালা দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত ১৯ মে চবি নিরাপত্তা দপ্তর থেকে জামায়াত-শিবিরের প্রচারণার বিভিন্ন বই উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন ধরেই ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে তোলপাড়। ওই দপ্তরের ঊর্ধ্বতন সহকারী মো. ফেরদৌসের টেবিল থেকে এসব বই উদ্ধার করে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। এ ঘটনার পর নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ডেপুটি রেজিস্ট্রারের সঙ্গেও জামায়াত ইসলামীর সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ পেয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গত ২০ মে প্রক্টর অফিসে গিয়ে নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম কিবরিয়া ও ঊর্ধ্বতন সহকারী মো. ফেরদৌসের বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ সংযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ প্রদান করে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৫-২০ নেতাকর্মী দুপুর দেড়টার দিকে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে দুইজন সহকারী প্রক্টর গিয়ে গোলাম কিবরিয়াকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজুল হুদা লোটাস বলেন, বহিরাগত মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে আমরা গত ১৯ মে নিরাপত্তা দপ্তরে যাই। সে সময় ঊর্ধ্বতন সহকারী ফেরদৌসের পাশের বুক সেলফে সাজানো অবস্থায় জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন জিহাদি বই দেখতে পাই। পরে আমরা প্রক্টরকে খবর দিলে প্রক্টরিয়াল বডি এসব বই জব্দ করে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম কিবরিয়া ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত জামায়াত নেতা। তার ফেসবুক আইডি থেকে জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন মিছিল সমাবেশের ভিডিও শেয়ার করা করা হয়। যেগুলো নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। আমরা সবকিছু উল্লেখ করে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ছাত্ররা তার কক্ষে তালা দিয়েছে বলে শুনেছি। আরও গুরুতর বিষয় হলো, নিরাপত্তা দপ্তরের এই দুই কর্মকর্তা-কর্মচারী সুদের কারবারি করেন। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন সিক্রেট। আমরা ঊর্ধ্বতন সহকারী ফেরদৌসের হাতে বেশ কিছু চেক পেয়েছি। সে জানিয়েছে, ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম কিবরিয়ার লগ্নিতে সে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন সহকারীর টেবিল থেকে জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ করেছে। আমরা এসব তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো। যেহেতু কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেহেতু কর্তৃপক্ষই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।’