চট্টগ্রাম

চসিকের সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাত, ৩ ব্যাংক কর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট

জাপান আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ (জাইকা) প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠানের জমা করা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় তিন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রবিবার (৩০ জুন) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক ফয়সাল কাদের আদালতে অভিযোগপত্রটি জমা দেন।

ওই চারজন হলেন—অগ্রণী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার সাবেক কর্মকর্তা (ক্লিয়ার সেকশন) রফিক উদ্দিন কোরাইশী, প্রিন্সিপাল অফিসার শুভম দেওয়ান, গাজী আরিফুর রহমান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা সুমন মিয়া।

একই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলার কারণে চসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বিল) আশুতোষ দে ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বাজেট) মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে দুদকের অভিযোগপত্রে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ সুমন মিয়ার নামে অগ্রণী ব্যাংক নগরের আগ্রাবাদ শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশী চসিকের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবের চেক জমা না দিয়ে সুমন মিয়া নামের ওই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে জমা করতেন।

এরই ধারাবাহিকতায় রফিক উদ্দিন বিভিন্ন তারিখে মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুকূলে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-জাইকার সোনালী ব্যাংক হিসাব থেকে ইস্যু করা ৪১টি চেক করপোরেশনের হিসাবে জমা করেননি। এগুলো সুমন মিয়ার হিসাবে জমা দিয়ে ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন ঠিকাদারের দেওয়া আরও আটটি চেকের ৯৯ লাখ টাকা একইভাবে তুলে নেওয়া হয়। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এই টাকা ভাউচার পরিবর্তন করে করপোরেশনের হিসাব শাখায় জমা না করে আরেকটি হিসাবে জমা হলেও করপোরেশনের হিসাব শাখার গাফিলতি ছিল। বিষয়টি তারা যথাযথভাবে তদারকি করেনি। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে দুদক।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের হিসাব নম্বরে ৮৭ লাখ টাকা জমা না করে আত্মসাতের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার সাবেক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশীকে আসামি করে মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চসিকের হিসাব নম্বরে যে পরিমাণ টাকা জমা থাকার কথা, সেই পরিমাণ টাকা জমা না থাকায় অগ্রণী ব্যাংকের শাখাপ্রধানকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে শাখাপ্রধান রফিক উদ্দিন কোরাইশীকে টাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। পরবর্তী সময়ে চসিকের চেকের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *