চট্টগ্রাম

চিনিতে শুল্কছাড়ের সাড়ে ৪৪ কোটি টাকা আমদানিকারকের পকেটে

আমদানি শুল্ক ও বুকিং রেট কমলেও লাগামহীন চিনির বাজার। গত ৫০ দিনের ব্যবধানে ভোগ্যপণ্যে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ বাজার খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে প্রতি মণ চিনির দাম বেড়েছে ৪শ টাকা। একই সময়ে খুচরা বাজারেও কেজিতে চিনির দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, মিলার ‘সিন্ডিকেট’-এ বেসামাল চিনির বাজার। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।

জানা যায়, দেশে বছরে কমবেশি ১৮ থেকে ২০ লাখ টন পরিশোধিত চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় চিনিকলগুলো থেকে আসে ২৫ হাজার থেকে এক লাখ টনের মতো। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় ১৫ চিনিকলে ২১ হাজার ৩শ টন চিনি উৎপাদিত হয়েছে। অবশিষ্ট চিনি আমদানি করে মেটানো হয়েছে চাহিদা।

দেশের চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর প্রায় ৯৮ শতাংশের বেশি চিনি আমদানি করতে হয়। ব্যক্তিখাতের পাঁচ শিল্পগ্রুপ সিটি, মেঘনা, এস আলম, আবদুল মোনেম লিমিটেড ও দেশবন্ধু সুগার মিল অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে। পরে নিজেদের মিলে পরিশোধন করে বাজারজাত করে এসব চিনি।

রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের পাঁচ মিলারসহ ছয় আমদানিকারক ১৯ লাখ ১৩ হাজার ৫৫৫ মেট্রিক টন চিনি আমদানি করেছে। এসব চিনির বেশির ভাগ আসে ব্রাজিল থেকে। একটি অংশ ভারত থেকে আমদানি হয়। এই আমদানি করা চিনি থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে পাঁচ হাজার ৮৩৭ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার ৪৫২ টাকা। এর মধ্যে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪৬ টন ৪৩৭ কেজি, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৭২৪ টন ৩৩০ কেজি, এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ ৪ লাখ ২১ হাজার ৪৫০ টন, দেশবন্ধু সুগার মিলস ৯৪ হাজার ৫৩ টন ৩৭০ কেজি, আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৪ টন ৭৬৪ কেজি অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে।

ভোক্তা পর্যায়ে চিনির দামের লাগাম টানতে গত ১ নভেম্বর থেকে চিনিতে আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ১ নভেম্বর থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে প্রতিটি টনে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং এবং পরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে প্রতি টনে ৩ হাজার টাকা আমদানি শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *