ধর্ম

জান্নাতের সবচেয়ে বেশি অধিবাসী হবেন যারা

জান্নাতের সবচেয়ে বেশি অধিবাসী তারাই হবেন যারা পৃথিবীতে ছিলে দরিদ্র তবে ইমানদার। হাদিস শরিফ থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে।

সহিহ বুখারির ৩২৪১ নং হাদিসে বলা হয়েছে, নবী (সা.) বলেছেন, আমি জান্নাতের অধিবাসী সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি। আমি জানতে পারলাম, জান্নাতের বেশির ভাগ অধিবাসী হবে দরিদ্র। জাহান্নামিদের সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি, আমি জানতে পারলাম, এর বেশির ভাগ অধিবাসী নারী।

অর্থাৎ, অভাব-অনটন পেয়ে বসলে তাকে অকল্যাণ ধারণা করা ঠিক নয়। সর্বদা আল্লাহর ওপর সুধারণা করতে হবে, আল্লাহর রহমতের আশা করতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে, ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ এই কষ্টগুলোর প্রতিদান দুনিয়া ও আখিরাতে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবেন।

দরিদ্রতা, অভাব-অনটন মানুষের জীবনের অংশ। এতে হতাশ না হয়ে মহান আল্লাহর কাছে এর বিনিময় আশা করা উচিত। যারা অভাবের দিনে ধৈর্য ধরে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা রাখে, তার সিদ্ধান্তের ওপর খুশি থাকে, তাদের জন্য দরিদ্রতাও কল্যাণ বয়ে আনে। আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, একদিন আমি মসজিদে বসে ছিলাম।

হাদিসে আছে, একবার দরিদ্র মুহাজিরদের একটি দলও মসজিদে বসা ছিল। এমন সময় রাসুল (সা.) এসে তাদের কাছে বসে বলেন, দরিদ্র মুহাজিররা সুসংবাদ গ্রহণ করুন। তাদের চেহারা উজ্জ্বল হোক। কারণ তারা ধনীদের ৪০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

আমি দেখলাম, তাদের রং পরিবর্তন হয়ে উজ্জ্বল হয়ে গেল। আমারও আশা জাগল, আমি যদি তাদের মাঝে হতাম!
(দারেমি, হাদিস : ২৭২১)

আল্লাহর কাছে মর্যাদাবান হতে হলে সম্পদের আধিক্যের প্রয়োজন হয় না, বরং যে ঈমানের দিক থেকে যত ধনী, মহান আল্লাহর কাছে সে তত মর্যাদাবান।

দুনিয়াতে তাকে কেউ মূল্যায়ন না করলেও পরকালে তার মূল্য অনেক বেশি। বরং দুনিয়ার এই অবমূল্যায়ন তার পরকালের পুরস্কার আরো বৃদ্ধি করে। সাহল (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিল। তখন তিনি (সাহাবিদের) বলেন, তোমাদের এর সম্পর্কে কী ধারণা?

তারা উত্তর দিলেন, ‘যদি কোনো নারীর কাছে এ লোকটি বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া যায়। যদি সে সুপারিশ করে, তাহলে সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। যদি কথা বলে, তাহলে তা শোনা হয়।

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর মহানবী (সা.) চুপ করে থাকলেন। এরপর সেখান দিয়ে একজন গরিব মুসলিম অতিক্রম করতেই রাসুল (সা.) তাদের জিজ্ঞেস করেন, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তোমাদের কী ধারণা?

তারা জবাব দিলেন, যদি এ ব্যক্তি কোথাও বিয়ের প্রস্তাব করে, তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় না। যদি কারো জন্য সুপারিশ করে, তবে তা গ্রহণ করা হয় না। যদি কোনো কথা বলে, তবে তা শোনা হয় না। তখন রাসুল (সা.) বলেন, দুনিয়া ভর্তি ওই ধনীদের চেয়ে এই দরিদ্র লোকটি উত্তম। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫০৯১)

তাই অভাব-অনটনের দিনে হতাশ না হয়ে ধৈর্যধারণ করা উচিত। ঈমান ও তাকওয়া বৃদ্ধিতে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এবং মহান আল্লাহর দরবারে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য বেশি বেশি দোয়া ও হালাল উপায়ে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *