চট্টগ্রাম

জীবনের চেয়ে বড় কোনো বই নেই

শৈলী লেখক সম্মিলনে বক্তারা বলেছেন, জীবনের চেয়ে বড় কোনো বই নেই। কিন্তু জীবন এত অফুরন্ত, এত প্রসারিত যে সাহিত্যের কাছেও আমাদের ফিরতে হয় জীবনের পাঠ নিতে।

একটা ভালো বই আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু। কোনো ভালো বই সঙ্গে থাকলে মনে হয় আলাদা একটি পৃথিবী সঙ্গে আছে।

সব শুভবোধের অনুভূতিই লেখাকে বাঁচিয়ে রাখে, লেখককে বাঁচিয়ে রাখে। বইয়ের প্রকাশে যেমন প্রকাশকের বড় ভূমিকা থাকে, তেমনি তার প্রচার-প্রসারেও ভূমিকা রাখা জরুরি।

শুক্রবার (৮ মার্চ) নগরের জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে লেখক সম্মিলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সকাল সোয়া ১০টায় সম্মিলন উদ্বোধন করেন কবি আবুল মোমেন। ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে আলোচক ছিলেন কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হক, কবি ওমর কায়সার। অতিথি ছিলেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন শৈলীর উপদেষ্টা কবি রাশেদ রউফ।

কবি আবুল মোমেন বলেন, একক প্রচেষ্টায় দুই হাজার বই প্রকাশ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে শৈলী প্রকাশন। এটা সত্যিই বিরল একটা কাজ। বই প্রকাশনায় পরিমাণগত অগ্রগতির একটা গুরুত্ব আছে। এখান থেকেই সত্যিকারের সাহিত্য বেরিয়ে আসবে। প্রকৃত লেখকরা আপসহীন। লেখক ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু তাকে সামষ্টিকভাবে চলতে হয়।

ড. মাহবুবুল হক বলেন, শৈলীর দুই হাজার বইয়ের লেখকদের মধ্যে অনেকেই আছেন প্রতিনিধিত্বশীল লেখক। বইয়ের সংখ্যাগত পরিমাণ ছাপিয়ে এদের গুণগত, মানসম্পন্ন বইও প্রকাশিত হয়েছে। আজকে লেখকদের সামনে বড় সমস্যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। একজন লেখককে অনেক পড়াশোনা করে একটা লেখা তৈরি করতে হয়। কিন্তু বিজ্ঞানের চরম উন্নতির ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনায়াসে সেই লেখা লিখে দিচ্ছে। ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জীবন্ত লেখকের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে লিখলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার লেখক হওয়া যাবে। কিন্তু আমরা সেই লেখক হব না। আমাদের সৃজনশীলতা দিয়ে নিজেদের লেখকসত্তা তৈরি করতে হবে।

বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, শৈলী নতুন লেখকদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেয়।

তিনি লেখকদের উদ্দেশে বলেন, পরিণত হওয়ার প্রস্তুতি লেখককে নিতে হয়। লেখার গুণগতমান বজায় রেখে সাহিত্যচর্চা করাই লেখকদের কাজ।

মুহাম্মদ শামসুল হক বলেন, শৈলীর নানা কার্যক্রম প্রশংসনীয়। শৈলী সবসময় নবীন লেখকদের পাশে থেকে অনুপ্রাণিত করে।

ওমর কায়সার বলেন, শৈলী প্রকাশন নবীন লেখকদের আঁতুড়ঘর। লেখক-পাঠকদের মধ্যে সম্মিলন ঘটাতে পারে শৈলী।

আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চালনায় লেখক সম্মিলনের বিভিন্ন পর্বে সভাপতিত্ব করেন ড. আনোয়ারা আলম, প্রফেসর রীতা দত্ত, কবি এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা, ড. সেলিনা আখতার, কবি খুরশীদ আনোয়ার, বিপুল বড়ুয়া, সৈয়দ খালেদুল আনোয়ার ও কেশব জিপসী। আলোচক ছিলেন ড. ওবায়দুল করিম, ড. উদিতি দাশ সোমা, সিরু বাঙালি, আমিনুর রশীদ কাদেরী, নেছার আহমদ, তরুণ কান্তি বড়ুয়া, শংকর প্রসাদ দে, বাসুদেব খাস্তগীর, রেজাউল করিম স্বপন, ববি বড়ুয়া, পিংকু দাশ, জিনাত আজম, ফরিদা ফরহাদ, মৃণালিনী চক্রবর্তী, কাঞ্চনা চক্রবর্তী, ফেরদৌস আরা রীনু, সুলতানা নুরজাহান রোজী, লিপি বড়ুয়া, বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, তহুরীন সবুর ডালিয়া, বিশ্বনাথ চৌধুরী বিশু, নাসের রহমান, মহি মুহাম্মদ, জাহেদ মোতালেব, মিলন বনিক, বিচিত্রা সেন, রুনা তাসমিনা, মুশফিকুর রহমান, এমরান চৌধুরী, অরুণ শীল, আজিজ রাহমান, আবুল কালাম বেলাল, অমিত বড়ুয়া, শুকলাল দাশ, গোফরান উদ্দীন টিটু, জসিম উদ্দিন খান, অভীক ওসমান, ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, ছন্দা চক্রবর্তী, শিপন চন্দ্র দেবনাথ, মুহাম্মদ মহসীন চৌধুরী, এসএম ওমর ফারুক, নীলরতন দাশগুপ্ত প্রমুখ।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে মেহের আফরোজ হাসিনার সম্পাদনায় ‘চট্টগ্রামের নারী’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *