ধর্ম

তাওয়াফে জিয়ারত সময়মতো করতে না পারলে করণীয়

হজের তিনটি ফরজ কাজের মধ্যে অন্যতম একটি হলো তাওয়াফে জিয়ারত। এই তাওয়াফটি ১০ জিলহজ ভোর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় করতে হয়। এ সময় কাবাঘর তাওয়াফ বা সাতবার প্রদক্ষিণ করতে হয়।

ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর কাছে তাওয়াফে জিয়ারত আদায়ের ওয়াজিব সময় হল ১০ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত। হাজিরা মিনায় কঙ্কর নিক্ষেপের পর এই আমলটি করে থাকেন।

কেউ এই সময়ের পরে অর্থাৎ, ১০ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর তাওয়াফে জিয়ারত আদায় করলে ফরজ আদায় আদায় হয়ে যাবে। তবে ওয়াজিব তরক হওয়ার কারণে দম দিয়ে ক্ষতিপূরণ করতে হবে। আর তাওয়াফে জিয়ারত আদায়ের পূর্বে স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের জন্য হালাল হয় না।

এক ব্যক্তি তাওয়াফে জিয়ারত পালনে দেরি করার বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছেন—

‘আমি মীনায় কঙ্কর নিক্ষেপ করার পর কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই তাওয়াফে জিয়ারত করতে বিলম্ব হয়ে যায়। ইচ্ছা ছিল, ১২ জিলহজ মীনা থেকে কঙ্কর নিক্ষেপ করে এসে তাওয়াফ করব। কিন্তু মীনা থেকে আসার পর প্রচ- ভীড় দেখে তাওয়াফ করার সাহস হয়নি। মাগরিবের পর ভীড় কমে গেলে তাওয়াফ করেছি। ১২ জিলহজ মাগরিবের পর তাওয়াফ করার কারণে কি আমার উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হবে?

এর উত্তরে ফকীহ আলেমরা বলেন, জি, জরিমানা ওয়াজিব হবে। ১২ জিলহজ মাগরিবের পর তাওয়াফে জিয়ারত করার কারণে আপনার উপর একটি জরিমানা দম ওয়াজিব হয়েছে। কারণ, ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাওয়াফে যিয়ারতের নির্ধারিত সময়। এ সময়ের পর তাওয়াফে জিয়ারত করলে দম ওয়াজিব হয়। ইবরাহিম নাখায়ী রহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

إِذَا تَرَكَهُ حَتَى مَضى تِلْكَ الْأَيَامُ أَهْرَقَ لِذَلِكَ دَمًا

যে ব্যক্তি নির্ধারিত দিনগুলোর মধ্যে তাওয়াফে জিয়ারত করল না সে যেন একটি দম আদায় করে। )মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস : ১৩২২৭)

বলা হয় হয়, হজের বিধান পালনে ত্রুটি হলে, এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক বছর বয়সী ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা জবাই করা। অথবা গরু, মহিষ বা উটের সাত ভাগের এক ভাগ কোরবানি করা।

আর এ দমের পশু হেরেমে মক্কীর সীমানার ভেতরেই জবাই করা জরুরি। অতএব নিজে যাওয়া সম্ভব না হলে মক্কায় অবস্থানকারী অথবা হেরেমে গমণকারী কারো মাধ্যমে সেখানেই এই দমের পশু জবাই করতে হবে। হেরেমের বাইরে জবাই করলে দম আদায় হবে না।

(আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৪১, ৪২; রদ্দুল মুহতার ২/৬১৯; মানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী, ৩৪৮)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *