অন্যান্য

তীব্র গরমে হাঁসফাঁস মানুষের, বৃষ্টির জন্য হাহাকার

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে গোটা দেশ।অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন।চলতি মৌসুমের দেশের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রাজধানী ঢাকায়ও ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এবছর ঢাকায় এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা আর হয়নি।

তীব্র এই গরমে হাঁসফাঁস করছেন শ্রমজীবী মানুষ।দাবদাহে স্বস্তি পেতে শরীর-মন যখন ছায়া খোঁজে, তখন রুটি-রুজির জন্য বাধ্য হয়ে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের। গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার হচ্ছেন রিকশা ও ভ্যানচালকরা।

সারা দেশে বয়ে চলা তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। তীব্র গরমে তাদের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই শ্রমজীবী মানুষ।

তীব এই তাপপ্রবাহে সূর্য যখন আগুন ঝরাচ্ছে তখন একটু বৃষ্টির জন্য হাহাকার বয়ে যাচ্ছে মানুষের মনে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, ভারি বৃষ্টিপাত ছাড়া চলমান তাপপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আপাতত বৃষ্টিপাতেরও কোনো পূর্বাভাস নেই। আর কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে এই তাপমাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং আগামী আরও কয়েক দিন একই রকম তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, রাজশাহী ও পাবনা জেলাসহ খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর ফলে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

আগামী পাঁচ দিনে আবহাওয়া পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

এমন তাপদাহের জন্য বেড়ে যাচ্ছে হিট স্ট্রোকের শঙ্কা। একারণে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে যতদূর সম্ভব তাপ এড়িয়ে চলতে হবে। বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। গায়ে পাতলা কাপড় পরতে হবে। ডায়াবেটিস ও প্রেসারের রোগীদের রোদে না যাওয়াই ভালো। এসব রোগী যদি বাহিরে বের হলে সমস্যা মনে করেন তাহলে দ্রুত ঠান্ডা জায়গায় যেতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে।

গরমে যেসব রোগ দেখা দেয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো- ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতা, হিট স্ট্রোক ইত্যাদি। এ পরিস্থিতিতে একটু অসতর্কতায় ঘটতে পারে বিপদ।

এদিকে অতিমাত্রায় গরমের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতরসহ বেশ কয়েকটি ছুটির সমন্বয়ে টানা ২৬ দিন ছুটি কাটিয়ে রোববার (২১ এপ্রিল) দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ছিলো। আরও ৭দিন বন্ধের কারণে স্কুল খুলবে ২৮ এপ্রিল। এমনকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *