চট্টগ্রাম

পারকি বিচ, সড়কে গাড়ি থামালেও দিতে হয় চাঁদা

চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি বিচে নানা অব্যবস্থাপনা ও সমস্যার কারণে পর্যটকদের বিপাকে পড়ার গল্প নতুন নয়। এখন নতুন করে পার্কিংয়ের নামে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সৈকতে আসা পর্যটকদের যানবাহন। সৈকত এরিয়ায় গাড়ি প্রবেশ না করালেও ইজারার টোকেনে দিতে হচ্ছে চাঁদা। তবে বেআইনি সত্ত্বেও খরচ পোষাতে সড়কের গাড়ি থেকে চাঁদা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পারকি সৈকতের ইজারাদার।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আগামী ১১ মাসের জন্য পারকি সমুদ্র সৈকতের পার্কিংয়ের দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ টাকা ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হলেও ভ্যাট, আয়করসহ ২৩ লাখ ৪০ হাজার টাকায় সৈকতের পার্কিং ইজারা নেন স্থানীয় নুরুল আমিন নামে এক ব্যক্তি। আগে শুধু বিচে নামা যানবাহন থেকে পার্কিংয়ের টাকা নেওয়া হলেও নতুনভাবে ইজারা হওয়ার পর থেকে বিচ এলাকা ছাড়াও সড়কে চলাচল করা প্রতিটি গাড়ি থেকে নেওয়া হচ্ছে চাঁদা।

ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, সৈকতে থাকা এবং সড়কে থাকা প্রতিটি বাস থেকে ১৫০ টাকা, প্রাইভেট কার থেকে ৭৫ টাকা, সিএনজি থেকে ২০ টাকা এবং মোটরসাইকেল থেকে ২৫ টাকা করে পার্কিং বাবদ নেওয়া হয়।

সরেজমিনে পারকি সমুদ্র সৈকতের পার্কিং এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিচে নামার প্রতিটা রাস্তার মুখে রশিদ বই নিয়ে ইজারা তুলছেন ইজারাদারের নিয়োজিত লোকজন। এছাড়াও বিচের আশপাশে অবস্থিত বিভিন্ন রিসোর্টগুলোতে যেসমস্ত গাড়ি প্রবেশ করছে সেসব গাড়ি থেকেও পার্কিংয়ের চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।

দেখা যায়, পার্কিংয়ের নামে গহিরা সড়কের দু’পাশে বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি রাখা হয়েছে। এসব যানবাহন থেকেও নেওয়া হচ্ছে চাঁদা। রাস্তার দু’পাশে এভাবে পার্কিংয়ের নামে যানবাহন রাখার কারণে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। এসব যানবাহনের কারণে পারকি সমুদ্র সৈকত থেকে পারকি বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ আধা কিলোমিটারের যানজট লেগেই থাকে।

শাহেদ নামে এক সিএনজি ড্রাইভার জানান, আমি সড়ক থেকে পারকির যাত্রী নামাচ্ছিলাম। এমন সময় একজন এসে আমাকে রশিদ ধরিয়ে দিয়ে ২০ টাকা নিয়ে গেছে অথচ আমি সড়ক থেকে বিচ এরিয়ায় নামিও নাই।

পতেঙ্গা থেকে আসা বাচ্চু নামের এক কার ড্রাইভার জানান, এখানে পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নাই, অথচ সড়কে এসে গাড়ি থামানোর সাথে সাথে টোকেন একটা ধরিয়ে দিয়ে টাকা নিয়ে নিছে।

তবে সড়ক থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে সাব ইজারাদার মো.আনিস খান জানান, পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের জায়গা নাই। তাই সড়কে গাড়ি পার্কিং করতে হয় সৈকতে আসা যানবাহনগুলোকে। আর যেহেতু সড়কে যানজট নিরসনের আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োজিত রাখতে হয়। সেহেতু তাদের খরচ পোষাতে বেআইনি হওয়া শর্তেও সড়কে পার্কিং করা গাড়িগুলো থেকে পার্কিং বাবদ চাঁদা নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে পারকি বিচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, মঙ্গলবার সকালে এমন একটা অভিযোগ পেয়ে ইজারাদারদের সাথে যোগাযোগ করেছি তারা জানিয়েছেন পার্কিংয়ের জায়গায় পানি চলে আসায় সাময়িকভাবে রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করা হয়েছে। পানি চলে গেলে তারা রাস্তা থেকে পার্কিং উঠিয়ে নিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *