চট্টগ্রামফটিকছড়ি

ফটিকছড়িতে ভয়াবহ বন্যা, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বাড়ি-ঘর ডুবে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। বন্যাকবলিতদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা রাখা হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

জানা গেছে, টানা বর্ষণে হালদা নদী, সর্তা খাল, ধুরুং খাল,ফটিকছড়ি খাল, মন্দাকিনী খাল, গজারিয়া খাল, তেলপারি খাল, কুতুবছড়ি খাল,লেলাং খালসহ বিভিন্ন খালের বাঁধ ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। এতে উপজেলার ফটিকছড়ি পৌরসভা, নাজিরহাট পৌরসভা, সুন্দরপুর, পাইন্দং, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিল, দাঁতমারা, বাগানবাজার, নারায়ণহাট, ভুজপুর, লেলাং, সমিতিরহাট, রোসাংগিরী, জাফতনগর, বক্তপুর, নানুপুরসহ বিভিন্ন স্থানের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন।

বন্যার পানিতে ডুবে আছে চট্টগ্রাম-খাগগাছড়ি, গহিরা-হেঁয়াকো, নাজিরহাট-কাজিরহাট, কাটিরহাট-সমিতিরহাট-আজাদীবাজার সহ বিভিন্ন গ্রামীন সড়ক। তলিয়ে গেছে শত শত একর চাষের জমি, পুকুর, মাছের প্রজেক্ট, পোল্টি ফার্ম। হাটবাজারে সৃষ্টি হয়েছে জলবদ্ধতা।

লেলাং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইফতেখার উদ্দিন মুরাদ বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ফটিকছড়ি খালের বড় বাঁধ ও কুতুবছড়ি খালে স্লুইসগেট এলাকার বাঁধ ভেঙে এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের লেলাং ইউনিয়ন-এ ৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।’

নাজিরহাট পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আমার রশিদা পুকুর পাড়স্থ এলাকায় হালদা নদী পানিতে ৩০০ পরিবার বন্দী হয়ে আছে। মাইকিং করে অনেককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে ‘

এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। বন্যাকবলিত এলাকাবাসীর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ কর্তৃক গঠিত হয়েছে মেডিকেল টিম। যার ২০টি ইউনিয়নে এবং ৫টি সদরে। এছাড়া নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃক টিম গঠন করা হয়েছে।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প অফিসার আবুল হোসেন জানান, রাতে বিভিন্নস্থানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হলেও সকাল থেকে তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, খালের বাঁধ ভেঙে ও প্রবল স্রোতে পানি উপচে পড়ে ফটিকছড়ির বিভিন্ন স্থানে প্লাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছি। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খবরাখবর রাখছি। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃক টিম গঠন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *