ফেসবুকে প্রেম, ভৈরবে ঘুরতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নরসিংদীর রায়পুরার এক তরুণের সঙ্গে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার এক কিশোরীর (১৫) পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একে অপরকে প্রথমবারের মতো দেখেন গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে। এরপর সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়ে ওই কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনার পরপরই ধর্ষণে অভিযুক্ত দুই তরুণসহ আটজনকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে তরুণীর বাবা বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। আটক তরুণদের মধ্যে প্রেমিকসহ দুজনকে ধর্ষণের অভিযোগ এবং বাকি ছয়জনকে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ধর্ষণে অভিযুক্ত দুজন হলেন রায়পুরার পিরিজকান্দি গ্রামের পলাশ (১৮) ও ভৈরব পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার নির্জন ওরফে আরিয়ান (১৯)। ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার অন্য তরুণেরা হলেন রায়পুরার পিরিজকান্দি গ্রামের মো. রাব্বি (১৯), ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়ার সান মিয়া (১৮), একই এলাকার আবদুল্লাহ (১৮), কমলপুর এলাকার পাপন মিয়া (১৮), চন্ডিবের এলাকার হাসান মিয়া (১৮) ও একই এলাকার মো. ফুয়াদ (১৯)।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পলাশ ও কিশোরীর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁরা প্রথম ভৈরবে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। বিকেলে প্রথমে তাঁরা ভৈরবের কালী নদীর ওপর নির্মিত জিল্লুর রহমান সেতুর মানিকদী প্রান্তে গিয়ে একটি রেস্তোরাঁয় আড্ডা দেন।
ভুক্তভোগীর স্বজনেরা জানান, সন্ধ্যায় তাঁরা মেঘনা নদীর ভৈরব প্রান্তে আসেন। তিন সেতু এলাকায় ঘোরাঘুরি শেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মেয়েটিকে সেতু এলাকার ঝোপে নিয়ে ধর্ষণ করেন পলাশ। ওই দৃশ্য দেখে ফেলেন স্থানীয় কয়েকজন তরুণ। তাঁরা দুজনের কাছ থেকে মুঠোফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেন। এরপর পলাশকে আটকে রেখে অন্য তরুণদের সহযোগিতায় মেয়েটিকে ঝোপে নিয়ে ধর্ষণ করেন নির্জন। মেয়েটির চিৎকারে নদীর পাড়ে থাকা লোকজন ও পুলিশ এগিয়ে এসে আটজনকে হাতেনাতে আটক করে।
অভিযুক্ত পলাশ দাবি করেন, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে তাঁরা একে অন্যের কাছাকাছি আসেন। অন্যরা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করেন।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান বলেন, ফেসবুকে প্রেমের সূত্র ধরে ঘুরতে এসে মেয়েটি দুজনের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আজ তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।