অর্থনীতিচট্টগ্রাম

বকশিস না দিলেই ধানে থাকে চিটা, চালে আর্দ্রতা

সরকারি খাদ্য গুদামে ধান-চাল বিক্রিতে ‘বকশিস’ বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। চাষী ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ হচ্ছে, বকশিস না দিলে ধানে থাকে চিটা, চালের আর্দ্রতা থাকে খারাপ। পদে পদে হয়রানির কারণে সরকারের খাদ্য গুদামে ধান-চাল বিক্রিতে অনীহা রয়েছে।

আমন সংগ্রহ মৌসুমে সরকার ধান সংগ্রহ করছে কৃষকদের কাছ থেকে। আর চাল কিনছে চাল মিল মালিকদের থেকে। চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা হয় পূর্বকোণের। তারা বলেন, বাজারে চালের দাম বাড়তি। সরকারি মান বজায় রেখে খাদ্য গুদামে চাল বিক্রিতে লোকসান গুনতে হয়। তারপরও লাইসেন্স টিকিয়ে রাখার জন্য চুক্তি করা মিল মালিকেরা সরকারের কাছে চাল বিক্রি করেছেন।

সরকারের কাছে চাল বিক্রি করা তিন মিল মালিক বলেন, হালিশহর ও দেওয়ানহাট সিএসডি খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা করে ‘বকশিস’ দিতে হয়েছে। চালের মানভেদে বকশিসের পরিমাণও কম-বেশি গুনতে হয়েছে।

এক মিল মালিক গতকাল রাতে বলেন, ‘মিল মালিকেরা এবার যে মানের চাল দিয়েছেন, তা গুদামে বেশি দিন টেকবে না। বাজারে চালের দাম বাড়তি। তার উপর কেজিপ্রতি বকশিস গুনতে হয়েছে। বেশি লোকসানের কারণে মধ্যমানের চাল দিতে হয়েছে। এতে সরকার ঠকলেও লাভবান হয়েছেন খাদ্য গুদামের কর্মকর্তারা।’

খাদ্য বিভাগের তথ্য মতে, চলতি আমন মৌসুমে চট্টগ্রাম জেলায় আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৫ হাজার ৮০৭ টন। সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮০৬ মে. টন। ধান সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয় ৬ হাজার ১৪৭ টন। গত মৌসুমে চট্টগ্রামে আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়নি।

লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাল সংগ্রহ হয়েছে দুই হাজার ৪৭০ টন। সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে ৫১১ টন। আর ধান সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৬৯ টন।

গত বছর আমন মৌসুমে আতপ চাল সংগ্রহ করেনি সরকার। চারটি উপজেলা থেকে শুরু সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করেছে। এবার আতপ ও সিদ্ধ দুই প্রকারের চাল সংগ্রহ করছে খাদ্য বিভাগ। আতপ চাল কিনছে কেজিপ্রতি ৪৩ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৪ টাকা দরে। আর ধান কিনছে কেজিতে ৩০ টাকা দরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *