বাঁশখালী আওয়ামী লীগে বিরোধ তুঙ্গে!
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগে বিরোধ দেখা দিয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুরের দ্বন্দ্বের কারণে সব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে এক ধরনের হ য ব র ল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দলীয় কর্মকাণ্ডে।
দলীয় সূত্র জানায়, মূলত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুরের দ্বন্দ্বের কারণে বাঁশখালী উপজেলায় আওয়ামী লীগ দ্বিধাবিভক্ত। যার কারণে ‘সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় দাওয়াত পাননি মোস্তাফিজ; এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, শুক্রবার (২৯ মার্চ) কালীপুর রজনীগন্ধা কমিউনিটি সেন্টারে বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে হলেও ব্যানারে নিজের ছবি ছাড়া কারও ছবি রাখেননি অধ্যাপক আবদুল গফুর। ব্যানারের নিচে আয়োজক হিসেবেও আবদুল গফুরের নাম লেখা হয়েছে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরের নাসিরাবাদের সামারা কনভেনশন হলে বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও অধ্যাপক আবদুল গফুর। এর আগে ৬ ডিসেম্বর বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ২য় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে সেটি স্থগিত করা হয়।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, দীর্ঘ ২৬ বছর পর মোস্তাফিজ-গফুরকে নিয়ে আংশিক কমিটি হলেও দুজনের দ্বন্দ্বের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। এরইমধ্যে আবদুল গফুর একাই মতবিনিময় সভা করার মাধ্যমে দুইজনের বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
এদিকে বাঁশখালী আওয়ামী লীগে নতুন মেরুকরণ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও বর্তমান সাংসদ মুজিবুর রহমান সিআইপির বাইরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছেন। বাঁশখালীর কালীপুর রজনীগন্ধা ক্লাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুরের নেতৃত্বে “আর নয় বিভক্তি-একতাই শক্তি” শিরোনামে ‘সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন এই মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিলে। এই অনুষ্ঠান ঘিরে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে বাঁশখালীর রাজনৈতিক অঙ্গণে।
বাঁশখালী আওয়ামী লীগ বর্তমানে তিনটি ধারায় বিভক্ত। সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় হচ্ছে মুজিবুর রহমান সিআইপি, আবদুল্লাহ কবির লিটন ও মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বলয়ের নেতাকর্মীরাই উপস্থিত ছিলেন এই মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিলে।