চট্টগ্রামবাঁশখালীরাজনীতি

বাঁশখালী : ত্রিধারার আ. লীগে ডজনখানেক প্রার্থী

বাঁশখালী : গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয় বাঁশখালী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে ছিলেন আলোচিত-সমালোচিত। নির্বাচনে মোস্তাফিজের সা¤্রাজ্য দখলে নেন মুজিবুর রহমান। জাতীয় নির্বাচনের মতো আসন্ন উপজেলা নির্বাচনেও প্রার্থী নিয়ে জটিল সমীকরণে পড়তে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। মোস্তাফিজ ও আবদুল্লাহ কবির লিটনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান। তিন নেতাকে ঘিরে তিন ধারায় বিভক্ত বাঁশখালী আওয়ামী লীগের রাজনীতি। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে তিন নেতাকে ঘিরে ডজনখানেক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন।

বাঁশখালী উপজেলাকে বিএনপি ও জামায়াতের ঘাঁটি বলা হয়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও বিএনপির দাপট ছিল। উপজেলা ও পৌর নির্বাচনেও ভালো অবস্থান ছিল। ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যানসহ পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হয়েছিলেন জামায়াত দলীয় প্রার্থীরা। বিএনপি-জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করায় আপাতত কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে না।

২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য সুলতান-উল কবির চৌধুরীর ছেলে চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে উপজেলা পরিষদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। আসন্ন নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন কিনা তা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ও বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ জমির উদ্দিন সিকদার। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শিক্ষাবিদ মুজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রেহেনা আক্তার কাজমী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক সিকদার, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন সুমন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নূর হোসেন, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়ামুন নাহার, কাথরিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান চৌধুরী, ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা এম হারুনুর রশিদ, আওয়ামী লীগ নেতা এম সাহাদাত হোসেন, কৃষক লীগ নেতা শুভাশীষ রায় শিমুল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিহাব উল হক সিকদার।

মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জমির উদ্দীন সিকদার বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের সেবা করে আসছি। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বড় পরিসরে মানুষের সেবা করতে চাই।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর বলেন, তফসিল ঘোষণার পর দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।

সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়ামুন নাহার বলেন, দীর্ঘদিন থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালনের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছি।

ছনুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশিদ বলেন, দলীয় প্রতীক নেই, জনগণ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করলে অবশ্যই নির্বাচন করব।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা বলেন, উপজেলায় ১১৪ টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৫ জন। উপজেলা নির্বাচনে তা বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *