চট্টগ্রামরাজনীতি

বিধি ভেঙে প্রকাশ্যে ভোট চাইলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন

এবার প্রকাশ্যে ভোট চেয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। তিনি তাঁর বক্তব্যে ‘তাকে সংসদে পাঠানোর জন্য’ সবার কাছে দোয়াও চেয়েছেন। এমপি প্রার্থী হলেও আচরণবিধি সম্পর্কে তার ‘জানা নেই’ বলে দাবি তাঁর।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) নগরের পতেঙ্গার বাটারফ্লাই পার্কে এসএসসি-৯৪ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের আয়োজনে একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে কৌশলে ভোট চান উপস্থিত সবার কাছে।

জানা গেছে, গতকাল (শুক্রবার) বন্দর-পতেঙ্গার এসএসসি ৯৪-ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় পতেঙ্গায়। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন। তিনিও এসএসসি ৯৪ ব্যাচের একজন প্রাক্তন ছাত্র। সেখানে তিনি মাইকে বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্যের ৪ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি লাইভ ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। যা প্রতিবেদকের কাছেও সংরক্ষিত আছে।

ওই ভিডিওতে সুমন উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা যেটা, আমি প্রতীক যেটাই পাই—আগামী ৭ তারিখ সেই প্রতীকের জন্য আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রত্যেকটা স্কুলে প্রত্যেক ব্যাচের সকলের সাথে সমন্বয় ঘটাবেন। এই অঞ্চলের আমি সন্তান। আমি দুইবার কাউন্সিলর ছিলাম। আমি কারও কোনো ক্ষতি করিনি। আমার জন্য আপনারা কারো যদি হাতও ধরেন, আপনারা যে ওয়াদা দিবেন সেই ওয়াদার বদনামি আপনারা কোনদিনও কাঁধে নিবেন না।’

ওই এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এই বন্দর-পতেঙ্গা অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে, হাসপাতালের অভাব রয়েছে। এই অঞ্চলে গ্যাসের সমস্যা। এই অঞ্চলে ওয়াসার লাইনে পানি নেই। এই সসমস্যাগুলো সমাধানের পথ ইনশাআল্লাহ বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা যে সুযোগ দিয়েছেন এবার…আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।’

এসময় তিনি কৌশলে ভোট চেয়ে বলেন, ‘আপনারা যদি আপনার ভাইকে একবার সংসদে পাঠাতে পারেন; ইনশাআল্লাহ এই অঞ্চলের জনগণের যে সমস্যা সেই সমস্যাগুলো সমাধান হবে। আপনারা সকলে প্রার্থনা করবেন নামাজ পড়ে আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহর দরবারে আমাকে যেন কবুল করে নেয়। আমাদের চলার পথ সহজ করে ৭ তারিখ নির্বাচনে বিজয়ের বেশে নৌকায় চড়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেন আমি চলে যেতে পারি। সেজন্য আপনারা আমাকে দোয়া করবে।’

তাকে সংসদে পাঠাতে সবার কাছে অনুরোধ রেখে বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি, দল মত নির্বিশেষে সকল বন্ধুরা যে যে দলই করুক না কেন—আমাদের এখানে বিএনপি রয়েছে জাতীয় পার্টি রয়েছে। সকলের কাছে আমি চাই, আপনারা আপনার ভাইকে সংসদে পাঠাবেন। এই অবহেলিত আসনকে যেন আমরা স্মার্ট আসন হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’

নির্বাচন কমিশনের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ১২ ধারায় বলা আছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারবেন না।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। এর আগে ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ‘অনেকদিন পর অনেক পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হয়েছে। ৯৪ এ একসাথে এসএসসি পাস করেছি। সেখানে প্রায় আমার ৫শ’ বন্ধুরা উপস্থিত ছিলো। এটি কোনো রাজনৈতিক সভা ছিল না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *