চট্টগ্রামফটিকছড়ি

ভাইরাস জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ ফটিকছড়িতে

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন বহু রোগী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগ ও ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডাক্তারদের দাবি, প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বাইরের ডাক্তারদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চিকিৎসকেরা জানান, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার প্রতিটি গ্রামের ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এমনকি একই পরিবারের একসঙ্গে কয়েকজন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এসব রোগ গুরুতর নয় ভেবে অনেকেই হাসপাতালে না গিয়ে গ্রামের পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন।

সরেজমিনে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। যেখানে ৭০ শতাংশ রোগীই ভাইরাস জ্বর ও সর্দি-কাশিজনিত। বাকি ৩০ ভাগ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তবে ভাইরাসে আক্রান্তদের সাধারণত হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয় না। তাদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কারণ এ ভাইরাস মারাত্মক নয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা, কখনো অতিরিক্ত গরম, ভ্যাপসা গরম, আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ। এ সময়ে লোকজন বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। জ্বরে আক্রান্তদের শরীরে তাপমাত্রা ১০১ থেকে ১০৫ ডিগ্রী পর্যন্ত দেখা যায়।

দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা এস এম আহনাফ জানান, গত এক সপ্তাহে তিনি ও তার মাসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশিতে কষ্ট পেয়েছেন। এখনো সারেনি।

উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়নাল আবেদিন মুহুরী বলেন, এই পরিবর্তনের কারণে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভ্যাপসা গরম বিদ্যমান। প্রতিদিন আক্রান্ত রোগীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বহির্বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন।

উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক এইচ এস রাশেদুল আলম রাসেল বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় এ ধরনের রোগ দেখা দেয়। ভাইরাস জ্বরের পাশাপাশি সর্দি, কাশি ও গলা ব্যথা হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে জ্বর সেরে যায়।

বাংলাদেশ গ্রাম চিকিৎসক কল্যাণ সমিতি ফটিকছড়ি শাখার সভাপতি স্বপন কুমার দত্ত জানান, তাড়াতাড়ি ভালো হওয়ার জন্য কিছু কিছু রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। পুরো উপজেলায় ৩০০ জন পল্লী চিকিৎসক দিনে কমপক্ষে তিন হাজার রোগীর চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরেফিন আজিম বলেন, বিরূপ আবহাওয়ায় এ ধরনের রোগ দেখা দেয়। আক্রান্ত রোগীদের নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *