শিক্ষা

ভাঙল বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন, রাস্তায় গড়াগড়ি

গতকাল বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারেননি অনেকে। তার মধ্যে একজন ফাহাদ ফয়সাল। দেরি করে আসায় তিনিও অংশ নিতে পারেননি পরীক্ষায়।

ফাহাদের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এই কষ্টে তিনি কেন্দ্রের সামনেই চিৎকার করে কেঁদেছেন। রাস্তায় মাথা ঠুকরে গড়াগড়ি খেয়েছেন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সকালে রাজশাহীর মসজিদ মিশন একাডেমি কেন্দ্রে এমন ঘটেছে। ফাহাদ ফয়সালের বাড়ি নওগাঁ। তিনি যখন কেন্দ্রের সামনে আসেন তখন ৯টা ৪০ মিনিট।

ইতোমধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফাহাদ এসে পুলিশকে অনুরোধ করেন তাকে ভেতরে ঢোকানোর জন্য। কিন্তু পুলিশ রাজি হয়নি।

পরে প্রধান ফটক টপকে ফাহাদ ভেতরে ঢোকেন। তখন ভেতর থেকে পুলিশ তাকে বের করে আনে। পরীক্ষায় বসতে না পেরে ফাহাদ রাস্তায় মাথা ঠুকতে থাকেন। আহাজারি শুরু করেন। রাস্তায় গড়াগড়ি খান। এ সময় রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পরে ফাহাদ সেখান থেকে চলে যান।

সকালে মসজিদ মিশন একাডেমির সামনে দেখা গেছে, সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে ফাহাদ প্রধান ফটক টপকে ভেতরে ঢুকছেন। তিনি ভেতরে ঢুকে যাওয়ার পর দু’জন পুলিশ সদস্য তাকে ধরে ফেলেন।

এসময় ফটকের বাইরে থেকে এক নারী ‘ঢুকতে দেন প্লিজ’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। পুলিশ ফাহাদকে বের করে দেওয়ার পর তিনি আহাজারি শুরু করেন। তিনি বলতে থাকেন, ‘এটা আমার লাস্ট বিসিএস ছিল। আমাকে মেরে ফেলেন ভাই।’

একপর্যায়ে তিনি রাস্তায় হাত আর মাথা ঠুকতে থাকেন। ফাহাদ বলতে থাকেন, ‘আমি মরে যাব। আমি মরে যাব। আমার লাস্ট বিসিএস ছিল এটা।’ পরে এক ব্যক্তি ফাহাদকে ভেতরে ঢোকানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু পুলিশের বাধায় ব্যর্থ হন। কেন্দ্রের সামনে থাকা অনেক অভিভাবক বলতে থাকেন, পরীক্ষা তো এখনও শুরু হয়নি। ছেলেটাকে ঢুকতে দেওয়া উচিত ছিল।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নূর আহমেদ মাছুম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয় সকল কেন্দ্র সচিবদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং করেছিলেন।

তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরীক্ষা শুরুর আধাঘণ্টা আগে কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ না করলে তাকে যেন আর ঢুকতে দেওয়া না হয়। এই নির্দেশনাই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরই আরও আগে আসা উচিত ছিল।’

রাজশাহী মহানগরীর ২৯টি কেন্দ্রে বিভাগের আট জেলা থেকে এবার পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩১ হাজার ৯৪৭ জন। এরমধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ২৪ হাজার ১১৮ জন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুধু শাহ মখদুম কলেজ কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্য কোন কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *