চট্টগ্রামমীরসরাই

মাতৃত্বকালীন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ!

নারীদের মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা, সঠিক সময়ে বাচ্চা ভূমিষ্ঠ ও নবজাতকের পরিচর্যায় সরকারের ‘ডিএসএফ’ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী মো. কবির হোসেনের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন একই স্থানে থেকে বছরের পর বছর এসব অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এ কর্মচারীর বিরুদ্ধে।

গতকাল (মঙ্গলবার) এক অভিযানে এর প্রাথমিক সত্যতাও পায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি টিম। এদিকে, ‘ডিএসএফ’ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত কবির হোসেনকে বদলি করেছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন। একই সঙ্গে এ কর্মচারীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

খবর নিয়ে জানা যায়, বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘ডিএসএফ’ প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারীদের প্রসবকালীন সময় সরকার প্রদত্ত আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান না করে তাদের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত করার অভিযোগ পায় দুদক। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম গতকাল (মঙ্গলবার) অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে দুদক টিম হাসপাতালে ভর্তি ও সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়া ‘ডিএসএফ’ প্রকল্পের সুবিধাভোগী দু’জন প্রসূতির নিকটাত্মীয়ের সাথে কথা বলেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও কথা বলেন দুদক টিম। পাশাপাশি বিভিন্ন নথিপত্র যাচাইবাছাই করেন তারা।

দুদক জানায়, বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের লিখিত বক্তব্য ও সংগৃহীত রেকর্ডপত্র যাচাই করে দেখা যায়- মিরসরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মো. কবির হোসেন এর সাথে অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের সংশ্লিষ্টতা থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও স্বীকার করেন। এরপর বিষয়টি চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হলে কবির হোসেনকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুদকের পক্ষ থেকে টেলিফোনে বিষয়টি অবহিত করার পর তাৎক্ষণিক কবির হোসেনকে সন্দ্বীপ উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনার বিষয় তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দশ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, একজন গর্ভবতী মাকে মাতৃত্বকালীন সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাতায়াত বাবদ ৫০০ টাকা এবং পুষ্টিকর খাবারের জন্য ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিনামূল্যে প্রসবসহ প্রসূতির সব ধরনের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। সরকারের এ পাইলট প্রকল্পটি বেসরকারি বারৈয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের সাথে চুক্তি করা হয়। যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই’র কার্যক্রমের অংশের সাথে জড়িত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *