রাজনীতি

মাদক সম্রাট ছাত্রদল নেতার ছবি ভাইরাল

সাহাব উদ্দিনের বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের কলাতলী ঝিরঝিরিপাড়া এলাকায়। পরিচয় দেন কলেজছাত্র হিসেবে। এই ছাত্রের মুখোশের আড়ালেই চলছে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়মিত মাসোহারা দেন এই ইয়াবা কারবারি।

ইয়াবা এনে তা গণনা করছেন সাহাব উদ্দিন- এমন কয়েকটি ছবি সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

এগুলো উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিনে সাহাব উদ্দিন পাকস্থলীতে বহন করে এনেছেন বলে জানা যায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, ২০০৮ সাল থেকে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সাহাব উদ্দিন। যেসব কর্মকর্তার নজরে এসেছেন, তাদের নিয়মিত মাসোহারা দেন তিনি। ফলে ওই কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেন না। এ কারণে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সাহাবের ক্যাম্পকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট।

সূত্রটি আরও বলছে, সাহাব উদ্দিন গত তিনবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঝিলংজা ওয়ার্ড কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নাশকতাসহ নানামুখী কর্মকাণ্ডেও প্রথম সারিতে থাকেন। একটি ঝুপড়িঘর থেকে সাহাব উদ্দিনের এখন ৮টি ভাড়া বাসা, দামি বাইক ও নিজের বাড়ি রয়েছে। তার সিন্ডিকেট এখন নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে হোটেল-মোটেল জোনের মাদকের আস্তানাগুলো। সেখানে প্রতিদিন পথশিশুদের দিয়ে খুচরা ইয়াবা সরবরাহ করা হয়। ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় হলেও মাসোহারা দেওয়ার সুবাদে অভিযানের খবর আগেই পেয়ে যান সাহাব ও তার বাহিনী। ফলে পুলিশের অভিযান কেবল লোক দেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষার্থী। আমি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ এরপর দেখা করার কথা বলে ফোন বন্ধ করে দেন সাহাব উদ্দিন।

ঝিলংজা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ইউনূস বলেন, ‘বিষয়টি আমার কাছে জানা ছিল না। তবে আমি তদন্ত করে দেখব। যদি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকে সাহাব উদ্দিন, তাহলে আইনের সহযোগিতা নেব।’

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (ইন্টেলিজেন্স) দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘খবর পেয়ে একাধিকবার তার আস্তানায় অভিযান চালানো হয়েছে। এখনো তার বাসার চারপাশে নজরদারি রেখেছে পুলিশ। যেকোনো মুহূর্তে গ্রেপ্তার হবে এই মাদক কারবারি। যে ছবি আপনি পেয়েছেন, তা পুলিশের কাছেও রয়েছে।’

কক্সবাজার র‍্যাব-১৫-এর কোম্পানি কমান্ডার অ্যাডিশনাল এসপি আনোয়ারুল ইসলাম শামীম বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ছায়াতদন্ত শুরু হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *