খেলা

সহজ ম্যাচকে কঠিন করে জিতল বাংলাদেশ

সহজ ম্যাচকে কঠিন করে জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ। শনিবার (৮ জুন) ডি গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে দুই উইকেট হারিয়েছে শান্তর দল। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করে মুস্তাফিজ-রিশাদদের ঘূর্ণিতে মাত্র ১২৪ রানে থামিয়ে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে এক ওভার হাতে থাকতেই শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দৃঢ়তায় দুই উইকেটে জয় পায় টাইগাররা।

১২৫ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেও নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেন নি দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। মাত্র দুই বল খেলে ডাক মেরে ফিরে আসলেন সৌম্য। থুসারার বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন তিনি। আরেক ওপেনার তানজিদ ৬ বল খেলে ফিরলেন ৩ রানে।

মাত্র ৬ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে উদ্ধার করার কথা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর। কিন্তু উল্টো ১৪ বল খেয়ে ৭ রান করে থুসারার বলে ফিরেছেন ক্যাচ দিয়ে। ২৮ রানেই ৩ উইকেট নেই টাইগারদের। এ অবস্থায় চাপ সামলে দলকে টানছিলেন লিটন দাশ ও তাওহীদ হৃদয়। দুজনের দারুণ রসায়ন জয়ের দিকে যাচ্ছিল দলীয় ইনিংস। লিটন দাশ দেখে শুনে খেললেও হৃদয় ব্যাটকে তরবারি বানিয়ে লংকান বোলারদের কচুকাটা করতে থাকেন। কিন্তু তাদের সেই রসায়নে জল ঢেলে দিলেন হাসারাঙ্গা। ১০ রানে মাথায় দুই নির্ভরযোগ্য টাইগার ব্যাটারকে ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের জয়ের রাস্তায় কাটা হয়ে দাঁড়ালেন তিনি। দলীয় ৯১ রানে লিটন (৩৮ বলে ৩৬) এবং ৯৯ রানের তাওহীদ ( ২০ বলে চার ছক্কা ও ১ চারে ৪০ রান) ফিরলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে।

এরপর দলের ভরসা ছিল সাকিব ও মাহমুদউল্লাদ রিয়াদের উপর। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ দাঁড়াতে পারলেও দলকে হতাশ করে ফিরে গেলেন সাকিব। দলীয় ১০৯ রানের মাথায় নিজের ৮ রানে পাথিরানার বলে থিকসানার হাতে ধরা পড়লেন তিনি। জয় কঠিন হয়ে গেল বাংলাদেশের জন্য। এ অবস্থায় মাহমুদউল্লাহ সতীর্থ হিসেবে শেষ ভরসা ছিলেন তাসকিন। কিন্তু ১৮ তম ওভারের তৃতীয় চতুর্থ বলে রিশাদ ও তাসকিন থুসারার শিকারে পরিণত হলে। ম্যাচ পেণ্ডুলামের মত ঘুরতে থাকে। ম্যাচ হয়ে যায় ফিফটি ফিফটি। তবে আমাদের একজন কুল ফিনিশার মাহমুদ উল্লাহ আছেন। তিনি ক্রিজে থাকলে ভরসার শ্বাসটা একটু দীর্ঘ হয়। শেষ পর্যন্ত সেটা আরো একবার প্রমাণ করে দেখালেন তিনি। ১৩ বলে এক ছক্কায় ১৬ রানের হার না মানা ইনিংসে দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়ালেন তিনি।

এর আগে গ্রুপ ডি’র ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের ওপর বেশ চড়াও হন শ্রীলংকার দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা এবং কুশল মেন্ডিস। মাত্র ২.২ ওভারে ২১ রান তোলেন তারা। এরপর লঙ্কান শিবিরে প্রথম আঘাত আনেন ইনজুরি থেকে ফেরা তাসকিন আহমেদ। ৮ বলে ১০ রান করে ফেরেন কুশল। ৫ বলে ৪ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে কামিন্দু মেন্ডিস আউট হলে পাওয়াপ্লে শেষে ২ উইকেট হারিয়ে তারা তোলে ৫৩ রান।

এরপর দলের হাল ধরেন পাথুম, ২৮ বলে ৭ চার এবং ১ ছক্কায় ১ করেন ৪৭ রান। দলীয় ৭০ রানে লঙ্কানরা হারায় ৩ উইকেট। এরপর ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং চারিথ আসালাঙ্কা মিলে ৩০ রানের জুটি গড়লেও ১৫তম ওভারের প্রথম দুই বলেই দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। এই লেগস্পিনার ফিরিয়ে দেন চারিথ আসালাঙ্কা (১৯) এবং প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (০)। ১০০ রানে ৫ উইকেট পরার পর ঘুরে যায় ম্যাচের গতিপথ। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা তোলে ১২৪ রান। বাংলাদেশের পক্ষে রিশাদ ও মুস্তাফিজ নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া তাসকিন ২টি এবং তানজিম হাসান সাকিব ১ উইকেট নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *