সাইকেলে ভারতের ১০ রাজ্য ভ্রমণ করলেন পাহাড়ের বীর কুমার
ভারতের ১০টি রাজ্য সাইকেলে ভ্রমণ সমাপ্ত করে ঘরে ফিরলেন রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সন্তান বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকালে তিনি প্রায় ৯০ দিন পর কাপ্তাইয়ে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছান।
গত ২০২৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর সাইকেলে ভারত ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে তিনি সাইকেল নিয়ে রওনা করেন। এরপর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে তিনি সাইকেল নিয়ে ভ্রমণ শুরু করেন। একে একে ভারতের ১০টি রাজ্যের ৫ হাজার ৭শ কিলোমিটার পথ তিনি সাইকেল চালিয়ে ভ্রমণ সমাপ্ত করেন। এসময় তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, উড়িষ্যা, ছত্তিসগড়, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, কেরেলা, গোয়াসহ ১০টি রাজ্য ৭৩ দিনে সাইকেলে ভ্রমণ করেছেন।
ভ্রমণকালে তিনি বিভিন্ন মন্দির, গির্জা, পেট্রোল পাম্প, বাস স্টেশন, ট্রেন স্টেশন, কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থানে তাঁবু ক্যাম্পিং করে রাত্রিযাপন করেছেন। এছাড়া ভারতের অনেক ব্যক্তিও তাকে বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
এবিষয়ে বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, ২০২৩ সালে ১৭ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ দিয়ে প্রবেশ করে ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা হতে বাইসাইকেলে পুরো ভারত ভ্রমণের যাত্রা শুরু করি। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৩ দিনে মোট ৫ হাজার ৭শ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে ভারতের ১০টি অঙ্গ রাজ্য ভ্রমণ সমাপ্ত করেছি।
এদিকে ভারতের সবকটি রাজ্যে সাইকেলে ভ্রমণের ইচ্ছা থাকলেও ভিসার নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের পর্যটক ভিসার মেয়াদ সমাপ্ত হওয়ায় ১০টি রাজ্য ভ্রমণ সমাপ্ত করেই দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। তবে তিনি জানান, ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী দুইমাস পর ভারতের বাকি ১৯টি রাজ্য ভ্রমণ সমাপ্ত করতে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করবেন তিনি। এদিকে ভারতে সাইকেল ভ্রমণ সমাপ্ত করতে বীর কুমারকে পানাম সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর, রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তি সহযোগিতা করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের ১০টি রাজ্যে সাইকেলে ভ্রমণের পাশাপাশি তিনি ওইসব রাজ্যের মানুষদের রক্তদানে উৎসাহী করতে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং মাদক বিরোধী জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন বার্তা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ভারতের ১০টি রাজ্যের মধ্যে দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করে সেখানকার এমপি, প্রশাসক এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউপি এলাকার কুক্যাছড়ির বাসিন্দা সুশীল তঞ্চঙ্গ্যার সন্তান। তিনি পেশায় একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। এছাড়া বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা ইতোমধ্যে ২০২৩ সালের ৮ জুন হতে ১৮ জুলাই পর্যন্ত মোট ৪০ দিনে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ সম্পন্ন করেছিলেন। সেইসঙ্গে ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘতম সড়ক টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া পর্যন্ত বাইকেলে মাত্র ১১দিনে ভ্রমণ সমাপ্ত করেছিলেন।