আন্তর্জাতিক

স্ত্রীকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন কাজাখস্তানের সাবেক মন্ত্রী

স্ত্রীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে কাজাখস্তানের সাবেক এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি লোমহর্ষক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

আল জাজিরা জানিয়েছে, অভিযুক্ত মন্ত্রীর নাম কুয়ানদিক বিশিমবায়েভ। ৪৪ বছর বয়সী কুয়ানদিক কাজাখস্তানের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। তিনি তাঁর স্ত্রী সালতানাত নুকেনোভাকে গত বছরের নভেম্বরে আলমাতি শহরের একটি রেস্টুরেন্টের অভিজাত কক্ষে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, কুয়ানদিক তাঁর স্ত্রীকে ঘুষি ও লাথি মারছেন। চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন অন্য একটি কক্ষে। সেই কক্ষে কী হয়েছে, তা জানা যায়নি। কারণ সেখানে সিসিটিভি ছিল না।

অন্য এক ফুটেজের বরাত দিয়ে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুয়ানদিকের অমানুষিক প্রহারের এক পর্যায়ে সালতানাত নুকেনোভা টয়লেটের ভেতরে লুকানোর চেষ্টা করেন। কুয়ানদিক সেখান থেকে তাঁকে টেনে বের করে পেটাতে থাকেন এবং গলা টিপে ধরেন। তখন অচেতন হয়ে পড়েন সালতানাত নুকেনোভা। রক্তে ভিজে যায় ঘরের মেঝে।

এরপর কাউকে ফোন করতে দেখা যায় কুয়ানদিককে। এ ঘটনার ১২ ঘণ্টা পর সেখানে চিকিৎসকসহ অ্যাম্বুলেন্স আসে। চিকিৎসকেরা ঘটনাস্থলেই পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে ৩১ বছর বয়সী সালতানাত নুকেনোভাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আদালতে এইরই মধ্যে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন কুয়ানদিক বিশিমবায়েভ। তাঁর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ভয়াবহ সহিংসতার অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ২০ বছর কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর। এই নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ড শুধু কাজাখস্তানেই নয়, সারা বিশ্বেই আলোড়ন তুলেছে।

এর আগে ২০১৭ সালে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কুয়ানদিক বিশিমবায়েভকে। ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল তাঁর। তবে তিন বছরের মধ্যেই তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন।

জাতিসংঘের মতে, কাজাখস্তানে প্রতিবছর অন্তত ৪০০ নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায়। কাজাখস্তানের নারী অধিকারকর্মী দিনারা স্মাইলোভা বলেন, ‘কাজাখস্তানে পারিবারিক সহিংসতার ঝড় বইছে। এ জন্য শুধু কাজাখস্তান একা দায়ী নয়, বরং সারা বিশ্ব দায়ী। কারণ এসব ঘটনায় সারা বিশ্ব চুপ করে আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *