পার্বত্য চট্টগ্রাম

২৮ বছর পর চালু হল অপারেশন থিয়েটার

রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৮ বছর পর প্রথম চালু হল অপারেশন থিয়েটার (অস্ত্রোপচার কক্ষ)। গতকাল শনিবার সকালে রামগড় পৌরসভার বাসিন্দা মো. রাসেলের স্ত্রীর অস্ত্রোপচারে কন্যা সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে এ অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম চালু হয়। এটি চালু হওয়ায় খুশি এলাকার মানুষ।

প্রসূতির স্বামী রাসেল বলেন, ‘গত বুধবার স্ত্রীকে রামগড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। স্বাভাবিক ডেলিভারি না হওয়ায় রোগীকে ফেনী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু এখানকার ডাক্তারদের কথায় আর কোথাও নিয়ে যায়নি। আজ (শনিবার) এ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে সিজারের সুবিধা পাবো প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। এ সুবিধা পেয়ে আমরা খুশি।’ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাছির উদ্দিন বলেন, বুধবার ভর্তি করার পর নরমাল ডেলিভারির জন্য ৩ দিন অপেক্ষা করা হয়। কিন্তু শিশুর অধিক ওজন ও মায়ের কিছু সমস্যার কারণে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এখন মা ও নবজাতক দুজন সুস্থ আছে।

তিনি জানান, গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. মাসুমা তাবাচ্ছুম প্রসূতির অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপারেশন থিয়েটার কার্যক্রম চালু করলেন। এসময় তাকে সহায়তা করেন অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের ডা. হোসেন, মো. জাহেদ সরওর্য়াদী. মেডিকেল অফিসার ডা. রোকসানা ইয়াসমিন, সিনিয়র নার্স সুমনা দেবী চাকমা, অনিমা রানী দাস।

১৯৯৬ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপিত হওয়ার পর বিভিন্ন সমস্যার কারণে কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার চালু করা সম্ভব হয়নি। এতদিন প্রসূতি অস্ত্রোপচারের সুবিধা না পেয়ে এ পার্বত্য এলাকার বাসিন্দারা ফেনী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে রোগীদের নিয়ে যেতে হতো। আর্থিকভাবে অসচ্ছল অনেক প্রসূতি অন্যত্র যেতে না পেরে সন্তান জন্মদানকালে মৃত্যুবরণও করতে হয়েছে।

এদিকে, গতকাল শনিবার অপারেশন থিয়েটার চালুর উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমএনসি ও এএইচ) ডা. মো. নিজাম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মাতৃস্বাস্থ্য) ডা. আজিজুল আলম, ইউনিসেফের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপক ডা. দেওয়ান মো. এমদাদুল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এবিএম মোজাম্মেল হক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমএনসি ও এএইচ) ডা. মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করা এবং মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় আনার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে সকল সমস্যা কাটিয়ে ২৮ বছর পর রামগড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সেবা চালু করা হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *