টাকার ‘কুমির’ স্ত্রী, দুদকের জালে সার্ভেয়ার দম্পতি
টাকার ‘কুমির’ স্ত্রী, দুদকের জালে সার্ভেয়ার দম্পতি
সুনীল কান্তি দেব মহাজন। ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার। দুর্নীতিতে যেন সিদ্ধহস্ত তিনি! কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও পুরোদস্তর গৃহিণী স্ত্রীকে বানিয়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ী! দুর্নীতির কামাই ‘জায়েজ’ করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন তাকে। স্ত্রীর নামে নগরের কোতোয়ালীতে কিনেছেন ৬৭ লাখ টাকা মূল্যের একটি দ্বিতল বাড়ি।
অবশেষে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ফেঁসেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার জালে। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮২১ টাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. খাইরুল ইসলাম ভূঁইয়া বাদী হয়ে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন—বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব চাম্বল গ্রামের নতুনবাজার এলাকার জয়ন্ত কুমার দেব মহাজনের ছেলে সুনীল কান্তি দেব মহাজন (৫৯) এবং তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেব (৫৫)।
দুদকের মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৯ সালে আসামি সুনিল কান্তি দেব মহাজনের বিরুদ্ধে দুদকে জমা পড়া জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগের অনুসন্ধানকালে তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেবের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনেরও প্রমাণ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর স্মৃতি রানী দেবের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। সেই নোটিশ গ্রহণের প্রায় একমাস পর ২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য ১৫ দিন সময় বাড়তি চেয়ে আবেদন করলে কমিশন অনুমোদন দেয়। এরপর একই বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
মামলায় দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮২১ টাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকার সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) তৎসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপপরিচালক মো. আতিকুল আলম।