অন্যান্য

ভারতে ফিরতে চান পাচার হয়ে আসা সঙ্গীতা

বরিশাল: পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসা সঙ্গীতা মণ্ডল এবার নিজভূমি ভারতে ফিরতে চাইছেন। এজন্য ভারত সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন এই তরুণী।

শৈশবের হৃদয়বিদারক ঘটনাগুলো আর ছয় বছর বয়সে বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর নানান বঞ্চনার মধ্য দিয়ে এ পর্যন্ত আসা জীবন সঙ্গীতার কাছে পরম বিস্ময়। বর্তমানে সঙ্গীতা মণ্ডল বরিশালের বিসিক শিল্প নগরীর রীণা কটন মিলসের স্বত্বাধিকারী নাজমুন নাহার রীণার কারখানায় কাজ করছেন।

সঙ্গীতা বলেন, আমার বাড়ি কলকাতার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের ভুরগাছি গ্রামে। বাবা গুরুপদ মণ্ডল, মা পার্বতী মণ্ডল। আমার চাচা রাহুল মণ্ডল। যখন আমার বয়স আনুমানিক পাঁচ অথবা ছয় বছর তখন চাচার কারণে আমার মা-বাবা খুন হন। আমি সেসবই চোখের সামনে দেখেছি। তারপর চাচা আমাকে এক লোকের কাছে বিক্রি করে দেন। তিনি আমাকে বেনাপোলে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে কিছুদিন মাদারীপুর কারাগারে ছিলাম। ওখান থেকে আমাকে বরিশাল সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ওই কেন্দ্রে কাজ শিখে বর্তমানে রীণা কটন মিলসে নিযুক্ত হয়েছি।

সঙ্গীতা বলেন, আমি আমার চাচার ফাঁসি চাই। তার জন্য আমাকে এতিম হতে হয়েছে। আমার জীবন বলতে এখন আর আসলে কিছুই নেই। শুধু ভেসে ভেসে বড় হচ্ছি।

রীণা কটন মিলসের স্বত্বাধিকারী নাজমুন নাহার রীণা বলেন, সঙ্গীতা আমাকে যা বলেছে তা খুবই হৃদয়বিদারক। মেয়েটির মা ছিলেন খুবই সুন্দরী। যে কারণে সঙ্গীতার চাচা বিভিন্ন সময়ে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। এ নিয়ে পরিবারেও বেশ ঝামেলা ছিল। একদিন এসব বিষয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে সঙ্গীতার মা ওর বাবাকে ছুরিকাঘাত করেন। ঘটনাস্থলে ওর চাচাও ছিলেন। সেসময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওর চাচা সঙ্গীতার মাকেও মেরে ফেলেন।

এরপরে সঙ্গীতাকে তার এক পরিচিতর মাধ্যমে বেনাপোলে পাঠিয়ে দেন। সেখানে একবছর ভিক্ষা করেছে সঙ্গীতা। ওখানে একদিন ধর্ষণচেষ্টার শিকার হলে একজনকে মারধর করে। পরে ওকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। সেখান থেকে তাকে সামাজিক মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *