কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে জালিয়াতি, ৫২ অস্থায়ী কর্মচারীকে রদবদল
কারিগরি বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তার সাজা হলেও আবার তাঁকে ওই পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পর ৫ হাজার সনদ তৈরির বিশেষ কাগজ চুরি করা হয়। এসব কাগজ দিয়ে ধাপে ধাপে তৈরি হয় জাল সনদ। সম্প্রতি বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এদিকে জালিয়াতির ঘটনায় ৫২ অস্থায়ী কর্মচারীকে রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সনদ জালিয়াতির অভিযোগে সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানকে আটক করে পুলিশ। বোর্ডের তদন্তে জানা যায়, শামসুজ্জামান ২০১৬ সাল থেকেই সনদ জালিয়াতির কাজে জড়িত। শুরুর দিকে শর্ট কোর্সের জাল সনদ তৈরি করতেন। এর দায়ে ২০১৭ সালে শাস্তি হওয়ার পরও তাঁকে ২০২১ সালে একই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১১ মার্চ সন্ধ্যায় অফিস ছুটির পর এই কর্মকর্তা গোপন রুমে প্রবেশ সনদের ৫ হাজার বিশেষ কাগজ চুরি করেন। যা দিয়ে পরবর্তীতে সনদ তৈরি করেন।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অধ্যাপক মামুন উল হক বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে ছাপানো যে ব্রাকগ্রাউন্ড সেগুলো এখান থেকে চুরি করে নিয়ে বাইরে প্রিন্ট করা হয়েছে।’
সনদ জালিয়াতির ঘটনায় বোর্ডের আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বোর্ড বলছে, এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রদবদল করা হবে।
অধ্যাপক মামুন উল হক বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সঙ্গে যত কর্মচারী আছে আমরা তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে আনবো। তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদেরকে কোথায় মোতায়েন করবো সেটাও আমরা তৈরি করেছি।’
এদিকে, বোর্ডের কার্যক্রম এখনও অটোমেশন হয়নি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বোর্ডের সব কার্যক্রম ডিজিটাল করার পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মাঈনুল হোসাইন বলেন, ‘কারিগরি ভাবেও ডিজিটাল সিস্টেমে জালিয়াতি যাতে না করা যায় সে জন্য সারা বিশ্বব্যাপী বেশ কিছু মেকানিজম কিন্তু আছে। ধরেন যে ডিজিটাল সিগনেচারের কথা বলতে পারি, সেখানে সার্টিফিকেট নিলে ডিজিটালে ভেরিফাই করা যায়।’
সব জাল সনদ চিহ্নিতের পর বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে বোর্ড।