দেশজুড়ে

বরগুনার অর্ধলাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে, নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে

ঘূর্ণিঝড় রেমাল থেকে রক্ষা পেতে উপকূলীয় জেলা বরগুনার চরাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।

জেলার নদ-নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পায়রা-বিষখালী নদীর ১৪টি খেয়া পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।

কেন্দ্রগুলোতে রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল থেকে মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের মধ্যে খাবার পানি, মুড়ি, চিড়া, বিছানা, কম্বল এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখনও ঝুঁকিপূর্ণ অনেক চরের বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি।

দুর্গম চরাঞ্চলের যেসব বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে নারাজ তাদের দ্রুত কেন্দ্রে অথবা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বরগুনা জেলা প্রশাসক মুহা. রফিকুল ইসলাম।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বরগুনার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, রোববার জোয়ারের উচ্চতা ছিল ২ দশমিক ৩২ মিটার; যা বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপরে।

ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে শক্তি বাড়িয়ে আগ্রাসী রূপ ধারণ করছে ঘূর্ণিঝড়টি।

পাউবো তথ্য অনুযায়ী, বরগুনার ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে নলটোনা, পালের বালিয়াতলী, কালমেঘা, রামনা এবং কালিকাবাড়ী নামক পাঁচটি জায়গায় প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

পরিকল্পিত আর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিবছরই ভাঙনের কবলে পড়তে হয় উপকূলবাসীর। বন্যার কথা শুনলেই আশ্রয় নিতে হয় সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারে।

বরগুনার ডিসি কার্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী মিলনায়তনে শনিবার জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়।

সেখানে জানানো হয়েছে, জেলায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র, তিনটি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৫১০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। পাশাপাশি ৯ হাজার ৬১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।

জেলার ছয়টি উপজেলায় ছয়টি এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটিসহ সাতটি কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে। জেলার ৪২টি ইউনিয়নে ৪২টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া ৪২২ টন খাদ্যশস্য এবং ১৭ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা মজুত আছে বলে জানান বরগুনা ডিসি মুহা. রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে মাইকিং করা হচ্ছে।

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *